হিলিতে পেঁয়াজের কেজি ৮ টাকায় নামল

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে টানা ছুটির ফাঁদে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে বছর শুরু করেছিল দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজের পাইকারি বাজার। পরবর্তীতে আমদানি স্বাভাবিক হয়ে আসায় পণ্যটির দাম কমেছিল। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে পেঁয়াজের দাম আরো কমে গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে স্থানীয় পাইকারি বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা কমে কেজিপ্রতি ৮ টাকায় নেমে এসেছে। চলতি বছরের শুরু থেকে দ্বিতীয় দফার দাম কমার পেছনে বাড়তি পেঁয়াজ আমদানিকে চিহ্নিত করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা।

গতকাল হিলির পাইকারি আড়তগুলো ঘুরে ভারতের নাসিক, ইন্দোর, হুগলি ও গুজরাট থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ সবচেয়ে বেশি বিক্রি হতে দেখা যায়। এদিন পাইকারি পর্যায়ে (ট্রাকসেল) ইন্দোর থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৮-৯ টাকায়। নাসিক থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯-১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। অন্যদিকে গুজরাট থেকে আমদানি করা আকারগতভাবে তুলনামূলক বড় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১৩ টাকায় বিক্রি হয়। এক সপ্তাহ আগেও আমদানি করা এসব পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১৩-১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। বর্তমানে পণ্যটির কেজি ৮-১৩ টাকায় নেমে এসেছে। সে হিসাবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে হিলির পাইকারি বাজারে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কমেছে সর্বোচ্চ ৫ টাকা।

পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দরপতনের প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। গতকাল হিলির খুচরা বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ১০-১২ টাকায় বিক্রি হয়। এক সপ্তাহ আগেও পণ্যটি মানভেদে কেজিপ্রতি ১৫-১৬ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সে হিসাবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে হিলির খুচরা বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা কমেছে। অন্যদিকে খুচরা বাজারে দেশে উৎপাদিত প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

হিলি স্থলবন্দর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি আগের তুলনায় বেড়েছে। বছরের শুরুতে এ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২০-২৫ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বর্তমানে এর পরিমাণ দৈনিক ৪০-৫০ ট্রাকে উঠেছে। বাড়তি আমদানির জের ধরে স্থানীয় বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমে কেজিপ্রতি ৮ টাকায় নেমে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক হারুন উর রশীদ হারুন বলেন, গত বছরের শেষ ভাগ থেকেই বাজারে নতুন মৌসুমের দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের সরবরাহ শুরু হয়। পণ্যটির সরবরাহও রয়েছে পর্যাপ্ত। এর জের ধরে স্থানীয় বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের বেচাকেনা কমে যায়। ফলে পণ্যটির দরপতন দেখা দেয়। একই সময়ে বেচাকেনা কম থাকায় দেশীয় আমদানিকারকরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয় বছর শেষের টানা চারদিনের সরকারি ছুটি। এসব কারণে চলতি বছরের শুরুতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম এক দফা কমে গিয়েছিল।

তিনি জানান, জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি আগের তুলনায় চাঙ্গা হয়েছে। এর জের ধরে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পণ্যটির দাম আরেক দফা কমেছে। এখন আমদানি করা এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে সাকল্যে ৮ টাকা গুনতে হচ্ছে। অন্যদিকে বাড়তি সরবরাহের জের ধরে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দামও তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *