হাঁটু ব্যথা দূর করার ম্যাজিক টিপস

অল্প সময় বসে থাকলে আবার কিছুক্ষণ দাঁড়াতে পারেন, এমনকি নিচে বসা, নামাজের সময় বসতেও কষ্ট হয়। চিকিৎসকের কাছে গেলে জানতে পারেন, উনি হাঁটুর ‘অষ্টিওআথ্রাইটিস’ বা অস্থিসন্ধির ক্ষয় জনিত রোগে ভুগছেন।

হাঁটুতে ‘অস্টিওআর্থ্রাইটিস’ বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন : বয়সজনিত অস্থিসন্ধির ক্ষয়, আঘাতজনিত কারণ বা জয়েন্ট ইনজুরি, অবিসিটি বা অধিক ওজন, মাংসপেশির দুর্বলতা, জেনেটিক বা বংশগত, অস্থিসন্ধির অস্বাভাবিকতা বা ম্যালফরমড জয়েন্ট, অস্থিসন্ধির দুই অস্থির মধ্যখানের সাইনভিয়াল ফ্লুইড শুকিয়ে গেলে। পেশাজনিত কারণে যাঁদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতে হয় বা যাঁরা সিঁড়ি দিয়ে ঘন ঘন ওঠা-নামা করেন অথবা অমসৃণ জায়গায় হাঁটাচলা করেন, তাঁরা সাধারণত এই রোগে বেশি ভুগে থাকেন।

কাদের বেশি হয়

এটি সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের বেশি হয়। নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই হয়, তবে পুরুষের তুলনায় নারীরা এই রোগে বেশি ভুগে থাকেন।

রোগনির্ণয়

বয়স্ক মানুষের জন্য খুবই পরিচিত একটি রোগ। এই রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীর বয়স, রোগের ইতিহাস ও ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই অনেকখানি রোগনির্ণয় করা সম্ভব। তার পরও কিছু পাথলজিক্যাল ও রেডিওলজিক্যাল টেস্ট করার প্রয়োজন হয়।

চিকিৎসা

এটি যেহেতু অস্থিসন্ধির ক্ষয়জনিত রোগ, তাই হাড়ের ক্ষয় সম্পূর্ণ বন্ধ করা সম্ভব নয়; কিন্তু চিকিৎসার মাধ্যমে ব্যথা নিরাময় ও অস্থি-সন্ধির চলাচল (মুভমেন্ট) স্বাভাবিক রাখা সম্ভব, যাতে রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাপনে কোনো কষ্ট না হয়।

* মেডিকেশন বা ওষুধের ক্ষেত্রে এনএসআইডিএস, ডায়েটরি সাপ্লিমেন্ট জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। যেমন : গ্লুকোসামিন হাইড্রোক্লোরাইড, কন্ড্রোটিন সালফেট, ক্যালসিয়াম, হ্যালুরনিক এসিড ইত্যাদি ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

* এ ছাড়া ফিজিওথেরাপির মাধ্যমেও চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। ফিজিওথেরাপি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন চিকিৎসাপদ্ধতি। তবে কারণ আনুযায়ী ফিজিওথেরাপির চিকিৎসা ভিন্ন হয়। তাই একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধায়নে এই চিকিৎসা নেওয়া ভালো।

অস্টিওআর্থ্রাইটিস অব নি জয়েন্ট চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসক বিভিন্ন রকম পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ম্যানুপুলেশন থেরাপি, আলট্রা সাউন্ড থেরাপি, শর্ট-ওয়েভ ডায়াথারমি, ইন্টার ফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, লেজার থেরাপিথেরাপিউটিক এক্সারসাইজস্ট্যাটিক সাইক্লিং ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে অনেক সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়।

লেখক : ডা. এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমণ্ডি, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *