স্মার্টফোন-ল্যাপটপে কর বৃদ্ধির বিষয়ে পুনর্বিবেচনার আহ্বান
ঢালাওভাবে সব কোম্পানি উৎসে কর বাড়ানো, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের কর বাড়ানো এবং পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার যে প্রস্তাবগুলো বাজেটে রাখা হয়েছে সেগুলো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
শনিবার (১১ জুন) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘উন্নয়ন সমন্বয়’ কেন্দ্রের আয়োজনে বাজেট পরবর্তীসময়ে সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাবেক গভর্নর বলেন, আমদানিনির্ভরতা কমানোর চাপ ও করোনা পরবর্তীসময়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অর্থায়নের জন্য বরাদ্দের চাহিদা, এই দুয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখে একটি সতর্ক বাজেট আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত হয়েছে। নাগরিকদের আর্থসামাজিক সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রবৃদ্ধি সচল রাখার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এগিয়ে নেওয়া এ বাজেটের লক্ষ্য। তবে বাজেটের কিছু কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।
এছাড়া তিনি এই মুহূর্তে জরুরি নয় এমন ব্যয় আরও সঙ্কুচিত করে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বাজেট আরও বাড়ানোর পক্ষে মত দেন।
উন্নয়ন সমন্বয়কের লিড ইকোনমিস্ট রবার্ট শুভ্র গুদা তার বক্তব্যে বলেন, নাগরিকরা স্বাস্থ্যসেবায় যা ব্যয় করেন তার দুই-তৃতীয়াংশ হয় মূলত ওষুধ কেনার জন্য। স্বাস্থ্য বাজেটের ওষুধ ও পচনশীল চিকিৎসা সামগ্রী উপখাতে বরাদ্দ মাত্র হাজার বারোশো কোটি টাকা বাড়ালেই গ্রামাঞ্চলে মানুষের এ বাবদ ব্যয় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে আসবে। অর্থমন্ত্রী জ্বালানি ও সারে ভর্তুকি প্রয়োজনবোধে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানোর কথা বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন।
এই নীতি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলোর ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হলে তা সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে মনে করেন জিনিয়া শারমিন।
ড. জামাল উদ্দিন কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানো এবং এনবিআরের রাজস্ব আহরণের দক্ষতা বাড়ানো ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায় থেকে কার্যকরভাবে কর আহরণের কোনো প্রস্তুতি এখন নেই।
সমাপনী বক্তব্যে খন্দকার সাখাওয়াত আলী একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ে নানামুখী টানাপড়েনের মধ্যে বাজেট প্রণয়ন করায় সংশ্লিষ্টদের প্রশংসা করেন এবং নাগরিকদের পক্ষ থেকে বাজেটের যে পর্যালোচনাগুলো হচ্ছে সেগুলো বাজেট চূড়ান্তকরনের আগে বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংস্থাটির পলিসি অ্যানালিস্ট জিনিয়া শারমিন, অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দীন এবং সমাজতাত্ত্বিক খন্দকার সাখাওয়াত আলী প্রমুখ।