সৌদি আরবের শিল্প উৎপাদন বেড়েছে ৬ শতাংশ

স্টাফ রিপোর্টার

ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরবে শিল্প উৎপাদন ৬ শতাংশ বেড়েছে। খনন ও নির্মাণকাজ বেড়ে যাওয়ায় মূলত এ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। দেশটির শিল্প ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় অন্তত দুটি অঞ্চল থেকে খনিজ সম্পদ উত্তোলনের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে। বর্তমানে নিলামে অংশ নেয়া ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা হয়েছে, যারা পরবর্তী সময়ে দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করবে। খবর আরব নিউজ।

সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পাওয়া নিলামকারী প্রতিষ্ঠান খনিজ কার্যক্রম চালানোর আগে আরেক দফা বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে। রিয়াদ ও আসির দুটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চল।

রিয়াদের রিদানিয়াহ অঞ্চলটি অবস্থিত সৌদি রাজধানীতে। সেখানে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে জিঙ্ক ও রৌপ্য সঞ্চিত রয়েছে। অন্যদিকে আসিরের মুহাদ্দাদ অঞ্চলের ১৩৯ কিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে সঞ্চিত রয়েছে কপার, জিঙ্ক, লেড ও স্বর্ণ। সম্প্রতি মন্ত্রণালয় থেকে বিনিয়োগকারীদের সহযোগিতা ও বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এভাবেই খনিজ খাতের উন্নয়ন ও গতিশীল জাতীয় শিল্প তৈরি হবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়।

নিলামকারীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে আফ্রিকান রেইনবো মিনারেলস, আলারা সৌদি ভেনচার্স, এএমএকে, ব্যারিক গোল্ড করপোরেশন ও ইআরজি অ্যারাবিয়া। অন্য নিলামকারীদের মধ্যে রয়েছে মেক্সিকো রিসোর্স, মা’আদেন, ইলমাদেন হোল্ডিং, বেদান্ত, আর্টার, পানোরো মিনারেলস, রয়েল রোড ও এমএসবি হোল্ডিং, আজলান অ্যান্ড ব্রোস ও নরিন।

মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতিতে জানানো হয়, নিলামকারীদের আবেদন জমা দেয়ার সময়সীমা চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত। ঠিক পরের মাসেই ঘোষণা করা হবে ফল। বিজয়ী প্রতিষ্ঠানকে তিন মাসের মধ্যেই খনিজ কার্যক্রম পরিচালনার লাইসেন্স দেয়া হবে।

ফেব্রুয়ারিতে মন্ত্রণালয় থেকে সৌদি আরবে খনিজ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়। নিলামে অংশগ্রহণের আহ্বানের সঙ্গে দেয়া হয় পাঁচটি পূর্বশর্ত। তখন থেকেই আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে আছে এটি। এর আগে ২০২২ সালে সৌদি আরব দুটি প্রধান খনিজ উত্তোলন প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করে। সেপ্টেম্বরের দিকে খনাইগুইয়াহ ও অক্টোবরের দিকে উম্ম আদ দামার পুরস্কৃত হয়।

মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেয়ার আগে পাঁচটি পর্ব নির্ধারণ করে দিয়েছে। ২০২৩ সালের তৃতীয় মাত্রিক নাগাদ শেষ হবে পুরো প্রক্রিয়া। মুহাদ্দাদ ও আর রাদিনিয়াহ এর মধ্যে শেষ দিকে। যদিও উম্ম হাদিদ, বির উমক ও জাবাল সাহাবিয়াহ অঞ্চলগুলো এখনো বাকি। সম্প্রতি সৌদি আরবের সরকার দেশটির খনিজ ও অন্যান্য শিল্পকে উচ্চতায় তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। গ্রহণ করেছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। স্বাভাবিকভাবেই দেশটির খনিজ খাতে অপ্রত্যাশিত উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। দেশটিতে খনিজ স্থাপনা বেড়ে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত ৩৭৭-এ পৌঁছেছে। মোট অঞ্চলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার। গত বছর কেবল মক্কাই ৭৬টি খনিজ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে। রিয়াদ ও মদিনায় প্রতিষ্ঠিত স্থাপনা যথাক্রমে ৬০টি ও ৫৩টি। বিপরীতে আসিরের স্থাপনা সংখ্যা ৩৪। সৌদি আরব অন্তত ২০ ধরনের খনিজ উপাদানের কেন্দ্র। স্বর্ণ, লৌহ, কপার, গ্রানাইট, মার্ভেল, ও অন্যান্য উপাদানের কথা বলেন মন্ত্রণালয়।

দেশটিতে অন্তত ৩৫টি স্থান রয়েছে বিশেষভাবে নজরে রাখার মতো। তাদের বলা হয় মিনারেল বেল্ট। সেখানে বিপুল পরিমাণ মিনারেল ডিপোজিট আকারে রয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ সৌদি আরব খনিজ খাতকে পুনর্গঠন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। বর্তমানে খাতটিই দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *