সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড ফাইজারের

স্টাফ রিপোর্টার

চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) ফাইজারের কভিড-১৯ প্রতিরোধী ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসাসামগ্রীর বিক্রি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ফলে নিজেদের ইতিহাসে এ সময়ে সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড গড়েছে মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টটি। খবর এপি।

এপ্রিল-জুন সময়ে কভিড-১৯ প্রতিরোধী ভ্যাকসিন কমির্নাটির বিক্রি ৮৮৫ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে এবং অন্য চিকিৎসা পণ্য প্যাক্সলোভিড সেখানে আরো ৮১২ কোটি ডলার যুক্ত করেছে। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানের মোট আয় ২ হাজার ৭৭৪ কোটিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ফাইজার জানিয়েছে, এ সময়ে প্রতিষ্ঠানের মুনাফা ৯৯১ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। শেয়ারপ্রতি এ মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১ ডলার ৭৩ সেন্টে।

জ্যাকস ইনভেস্টমেন্ট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্লেষকদের প্রত্যাশা ২ হাজার ৬৩২ কোটি ডলার আয়ের বিপরীতে শেয়ারপ্রতি মুনাফা দাঁড়াবে ১ দশমিক ৭৫ ডলারে।

নিউইয়র্কভিত্তিক ফাইজার ২০২২ সালের শেষার্ধে পূর্বাভাস কিছুটা বাড়িয়েছে। এখন প্রতিষ্ঠানটির প্রত্যাশা শেয়ারপ্রতি ৬ ডলার ৩০ সেন্ট থেকে ৬ ডলার ৪৫ সেন্ট মুনাফার। আগে যেখানে তাদের পূর্বাভাস ছিল শেয়ারপ্রতি ৬ ডলার ২৫ সেন্ট থেকে ৬ ডলার ৪৫ সেন্ট। পাশাপাশি সংস্থাটির প্রত্যাশা রাজস্ব আয় ৯ হাজার ৮০০ কোটি ডলার থেকে ১০ হাজার ২০০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে।

ফ্যাক্টসেট ফোরকাস্টের বিশ্লেষকদের জরিপ বলছে, পুরো বছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা ৬ ডলার ৫৪ সেন্টের পাশাপাশি আয় দাঁড়াবে ১০ হাজার ২৩৫ কোটি ডলারে। পুরো বছরে ফাইজার তাদের কমির্নাটি বিক্রির জন্য ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলার এবং প্যাক্সলোভিডের জন্য ২ হাজার ২০০ কোটি ডলারের আয়ের পূর্বাভাস বজায় রেখেছে।

এ পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধী যে চারটি টিকা যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পেয়েছে তার মধ্যে কমির্নাটিই সবচেয়ে জনপ্রিয়। ২০২০ সালের শেষের দিকে কভিড-১৯ প্রতিরোধী এই টিকা বাজারে আনা হয়। আর সেটা গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ফাইজারের সর্বাধিক বিক্রীত পণ্য হয়ে যায়। শিশুরা প্রতিরোধমূলক শট ও প্রাপ্তবয়স্করা বুস্টার ডোজ নেয়া শুরু করার আগেই এমন চিত্র দেখা যায়। এরই মধ্যে সারা বিশ্বে দুই শটের ৩৫ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি ডোজ সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন।

অন্যদিকে প্যাক্সলোভিড তৈরি করা হয়েছিল করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য, যারা গুরুতর অসুস্থতায় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে তালিকায় বয়স্ক মানুষ থেকে শুরু করে যাদের অন্যান্য শারীরিক সমস্যা যেমন- হার্টের অসুখ, স্থূলতা, ক্যান্সার বা ডায়াবেটিস থাকার কারণে কিছুটা ঝুঁকিতে রয়েছেন। তবে কিডনি ও লিভারের গুরুতর সমস্যা থাকা রোগীদের জন্য ওষুধটি প্রযোজ্য নয়। একটি কোর্সে অসুস্থ রোগীকে পাঁচদিনের প্রতিদিন দুটি করে ট্যাবলেট গ্রহণ করতে হয়।

ফাইজারের আয়ের একটি বড় অংশ আসে কমির্নাটি থেকে। কমির্নাটি ও প্যাক্সোলভিড ফাইজারের জন্য মূল রাজস্ব আয়ের উৎস হয়ে ওঠে। এমনকি এ দুটি পণ্যই নগদ মজুদ করতে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টকে সহযোগিতা করে সবচেয়ে বেশি। গত মে মাসের পরে ফাইজার ঘোষণা দেয় যে, প্রতিষ্ঠানটি মজুদের কিছু অংশ ব্যবহার করবে। দুটি পণ্য মিলে ফাইজারের বিক্রি ও শেয়ারদর নিয়ে যাচ্ছে ওপরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *