শ্রীলঙ্কায় হামলাকারী জঙ্গিদের ছবি প্রকাশ

শ্রীলঙ্কায় জঙ্গি হামলার দায় স্বীকারের পর এবার হামলাকারী দলের সাত জঙ্গি সদস্যের ছবি প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এএমএকিউ নিউজ এজেন্সির মাধ্যমে এ ছবি প্রকাশ করে তারা।

হামলাকারীদের নাম প্রকাশ করেই থেমে থাকেনি সংগঠনটি। তাদের নামও জানানো হয়েছে ছবির মাধ্যমে। আইএসের পক্ষে এদের কম্যান্ডো ভাই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাত জঙ্গি হলো- আবু উবাইদা, আবু আল মুক্তার, আবু খলিল, আবু হামজা, আবু আল বাররা, আবু মুহম্মদ ও আবু আবদুল্লা।

প্রকাশিত ছবির সঙ্গে হামলাকারী আটজনের গুণের কথাও উল্লখ করা হয়। বলা হয়, আল্লাহর নামে আমাদের যোদ্ধারা খ্রিষ্টানদের অনেক গির্জা ও হোটেলে গিয়েছিলেন। আবু হামজা কলম্বোতে অ্যান্টনি চার্চে আক্রান্ত হন এবং মানুষের মাঝখানে নিজেকে উড়িয়ে দেন। আবু খলিল সেন্ট সেবাস্তিয়ান চার্চ গির্জার কাছে গিয়েছিলেন এবং ইস্টার উদযাপন করছিলেন তাদের মাঝখানে নিজেকে বোমা মেরেছিলেন।

আবু মুহম্মদ জিয়েন চার্চের কাছে গিয়ে নিজেকে বোমা মেরে ফেলেছিলেন। আবু উবাইদা, আবু আল-বাররা ও আবু আল-মুখতার কলম্বো শহরের মাঝখানে হোটেল সাংগ্রি-লা, সিনামুন এবং কিংসবারিতে গিয়েছিলেন। তারা আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।

ভয়াবহ ধারাবাহিক বিস্ফোরণের দু’দিন পর ঘটনার দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট জঙ্গি সংগঠন। সংগঠনের এএমএকিউ নামের সংবাদসংস্থায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনই জানানো হয়। মঙ্গলবার এ নিউজ এজেন্সির তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সংবাদ মাধ্যমে।

তবে জঙ্গি সংগঠনের প্রকাশিত তথ্য যাচাই করে দেখার চেষ্টায় রয়েছে কলম্বো। প্রশাসনের সন্দেহের তির ছিল স্থানীয় মুসলিম মৌলবাদী সংগঠন এনটিজের দিকে। এ সংগঠনের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন জামায়াত উল মুজাহিদিনের যোগ রয়েছে বলে দাবি করেন শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী রোয়ান উইজেবর্ধন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মোট ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হলো।

এদিকে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। রোববার (২১ এপ্রিল) ইস্টার সানডের সকালে শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা, তিনটি বিলাসবহুল হোটেল ও আরও দুটি স্থাপনায় সংঘবদ্ধ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২১ জনে। এ ছাড়া আরও ৫ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৮ জন বিদেশি নাগরিক। এর মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের নাতি জায়ানও রয়েছে।

দেশটিতে এক দশকের গৃহযুদ্ধ অবসানের পর এটাই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী এক নৃশংসতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *