শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র আছে, তাকে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেয়ার নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’

মঙ্গলবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় ‘শেখ হাসিনা : বাংলাদেশের স্বপ্নসারথি’ শিরোনামে আলোকচিত্র ও শিল্পকর্মের মাসব্যাপী প্রদর্শনী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যখন তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয় তখন কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পথ বেছে নেয়। আজও শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারত। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে ক্রমাগত তারা পরাজিত হয়েছে। তাই তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। আজ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আজও তার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র আছে। আমরা শুধু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত রাষ্ট্র নয়, একটি উন্নত জাতি গঠন করতে চাই।

মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা বলেন। আজ সব সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে বহু দূর এগিয়েছে। আমরা অনেক সূচকে ভারতকেও পেছনে ফেলেছি। বিশেষ করে সামাজিক সূচক এবং মানব উন্নয়ন সূচকে।

তিনি বলেন, আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত সাড়ে ১০ বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করছে। গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যা ছিল সেটি এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকেও অবাক করে দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খাদ্য উদ্বৃত্ত দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। আমরা মৎস্য উৎপাদনে পৃথিবীতে চতুর্থ। ছোট্ট একটি দেশ, এভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে এটি আজ পৃথিবীর সামনে একটি উদাহরণ। সব বিশ্বনেতারা আজ প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা হচ্ছেন উন্নয়ন-অগ্রগতির নায়ক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত করার, একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত করার। বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে অনেক আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত হতো।

তিনি বলেন, আশির দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মালয়েশিয়া থেকে শিক্ষার্থীরা এসে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ত। সিঙ্গাপুর তখন জেলেপল্লী থেকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার প্রচেষ্টা শুরু করেছে, কিছুটা সফলতা পেয়েছে। তারা বহু আগে আমাদের পেছনে ফেলে সমৃদ্ধ হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন তাদের আগেই বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত করতেন। কিন্তু তিনি স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি। আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি উড়াল দেয়ার পথে। জাতিসংঘের মহাসচিব থেকে শুরু করে সবাই আজ প্রশংসা করছে।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। কোনো ব্যক্তির জীবনে যদি স্বপ্ন না থাকে তাহলে স্বপ্ন পূরণের তাগাদা থাকে না। স্বপ্নহীন মানুষের পক্ষে বহু দূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। রাষ্ট্রীয় জীবনে স্বপ্ন থাকতে হয়। সেটি অনুধাবন করে শেখ হাসিনা জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। তার চলার পথ কখনও মসৃণ ছিল না। একটু আগে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বিস্তারিত বলেছেন। তাকে একে একে ১৯ বার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু তিনি বারবার মৃত্যুর উপত্যকা থেকে ফিরে এসেছেন। দ্বিধান্বিত হননি, বিচলিত হননি বরং তিনি আরও জোরে আরও প্রত্যয়ে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা একটি কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, দেশকে এমনভাবে গড়ব, পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকবে।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ডক্টর রফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *