শিশুর জন্ডিস হলে যা করবেন

শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ নবজাতকেরই জন্মের পরপর জন্ডিস হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একে বলে স্বাভাবিক জন্ডিস বা চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ফিজিওলজিক্যাল জন্ডিস। শিশুর যকৃৎ পুরোপুরি কর্মক্ষম হয়ে উঠতে একটু দেরি হলে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে জন্ডিস হয়।

জন্ডিস বোঝার উপায়?
শিশুর হাতের তালু হলুদ হয়ে গেছে কি না লক্ষ করুন। সাধারণত শিশুর মুখ, হাত ও বুক বা পেটের ওপর পর্যন্ত হলুদ হতে দেখা যায়। মলের রং সবুজ হতে পারে। শিশুর গায়ের রং পরিবর্তিত হতে দেখলে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা পরীক্ষা করা যায়। রঙের পরিবর্তন বাড়তে দেখলে এই পরীক্ষা প্রয়োজনে বারবার করা যায়। শিশুকে নিয়মিত দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। বিশেষ করে ফিজিওলজিক্যাল বা স্বাভাবিক জন্ডিসের মূল চিকিৎসাই হচ্ছে শিশুকে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়ানো।

রোদ চিকিৎসা বা আলো চিকিৎসা
বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে সাধারণত শিশুকে ফটোথেরাপি বা আলোক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর উপকারিতা ও কার্যকারিতা নিয়ে মতভেদ থাকলেও এখন পর্যন্ত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিদিন সকালে নবজাতককে আধা ঘণ্টা রোদ পোহাতেও বলা হয়। তবে সূর্যের কড়া রোদ ও অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

কখন সতর্ক হবেন?
স্বাভাবিক জন্ডিস সাত দিনের মধ্যেই সেরে ওঠার কথা। এর পরও কিছু ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জন্ডিস দেখা দিলে, সাত বা দশ দিনের পরও না সারলে, শিশু খাওয়া বন্ধ করে দিলে বা কমিয়ে দিলে, জ্বর বা সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে, বিলিরুবিনের মাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকলে বা আগের শিশু জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে থাকলে অবশ্যই শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করুন।

লেখক : রেজিস্ট্রার, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *