শিল্পনীতির আইনি ভিত্তি প্রয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার

‘জাতীয় শিল্পনীতি ২০২১’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে বর্তমান নীতিতে থাকা অনেক সুবিধার সুফল নিতে পারছেন না উদ্যোক্তারা। এমন অবস্থায় আগামী শিল্পনীতির আইনি ভিত্তি থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন এফবিসিসিআইয়ের শিল্প ও শিল্পনীতি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা।

সোমবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির প্রথম সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

তারা অভিযোগ করেন, দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন নীতি একে অন্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ কারণে নানা ক্ষেত্রে নীতিসুবিধা বঞ্চিত হতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। ফলে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে শিল্পায়ন।

বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং শিল্প ও শিল্পনীতি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, শিল্পনীতি বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি। এছাড়া অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়কে বিশেষায়িত করা প্রয়োজন।

তিনি অভিযোগ করেন, বিসিক শিল্পনগরীতে কোনো সেবা না পেলেও সার্ভিস চার্জ দিতে হয় উদ্যোক্তাদের। সংশ্লিষ্ট শিল্প মালিকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই কখনো কখনো এ চার্জ ৫০ থেকে ৬০% বাড়ানো হচ্ছে। বিসিকের বিভিন্ন শিল্পনগরীতে জমির উচ্চমূল্যের কারণে শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বিভিন্ন দেশ তাদের শিল্পের সুরক্ষা দিতে বিদেশি পণ্যে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্কসহ নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপ করে। বাংলাদেশকেও স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় এসব পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইয়ির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।

বৈঠকে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, অর্থনীতিতে ৫০ শতাংশের বেশি অবদান রাখে সেবাখাত। কিন্তু শিল্পনীতির খসড়ায় এ খাতকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। অর্থনীতির বিকাশে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও শিল্পনীতিতে তার উল্লেখ নেই। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ক কর্তৃপক্ষের নীতি ও শিল্পনীতির মধ্যে অনেক অসামঞ্জস্য থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন ২২৭ টি পণ্য দেশে উৎপাদন করতে বিএসটিআই’র মান সনদ লাগে। অথচ আমদানির বেলায় এই মান সনদ লাগে মাত্র ৫৫টি পণ্যের। এই বৈষম্যের সুযোগ নিয়ে অনেক নিম্নমানের বিদেশি পণ্য দেশীয় বাজার দখল করেছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (নীতি) মো. সেলিম উল্লাহ খসড়া শিল্পনীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

অন্যান্যদের মধ্যে সভায় উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক ও আসিফ ইব্রাহিম এবং এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবুল কাশেম খান, ড. নাদিয়া বিনতে আমিন, আব্দুল হক, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবীর, এফবিসিসিআইর উপদেষ্টা মনজুর রহমান, বিল্ডের সিইও ফেরদৌস আরা বেগম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *