শফিকের ব্যাটে গলে রেকর্ড পাকিস্তানের
প্রথম ইনিংসে হাল ধরা বাবর আজম রেকর্ড রানের লক্ষ্যে নেমে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তার ব্যর্থতা ভুলিয়ে দিলেন আব্দুল্লাহ শফিক। ধৈর্যের চরম পরীক্ষা দিয়ে পাকিস্তানকে জেতালেন গল টেস্ট, এই মাঠে রেকর্ড ৩৪২ রান তাড়া করলো সফরকারীরা তার ব্যাটে। ৪ উইকেটে জিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলো পাকিস্তান।
অবশ্য ম্যাচে উত্তেজনার রেণু ঠিকই ছড়িয়েছে। শেষ দিন প্রথম সেশনে দুই উইকেট নিয়ে প্রভাত জয়াসুরিয়া শ্রীলঙ্কার আশা জাগান। লাঞ্চের পর আরও একটি উইকেট হারায় পাকিস্তান। লঙ্কানদের জন্য বড় হতাশার মুহূর্ত তৈরি হয় শফিকের ক্যাচ মিস। ১৫১ রানে ডিপ স্কয়ার লেগে তার ক্যাচ ছাড়েন কাসুন রাজিথা। সেখানেই যেন নিশ্চিত হয়ে যায় পাকিস্তানের জয়ের মঞ্চ।
কতটা ধৈর্য নিয়ে শফিক ওপেনিংয়ে নেমে ম্যাচ শেষ করে দিয়ে এলেন, তার প্রমাণ মেলে তার চারশর বেশি বল খেলায়। ৫০ রানের আগে যেখানে চারটি বাউন্ডারি, সেখানে একশর আগে আর দুটি ৪ ও এক ছয় মারেন। তারপর বেশ সতর্ক হয়ে টুকটাক করে রান নিয়ে দলকে পৌঁছে দিলেন জয়ের বন্দরে। দুইবার জীবন পেয়ে ক্যারিয়ার সেরা ১৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
শেষ দিন ১২০ রান লাগতো পাকিস্তানের। শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের জুটি পাকিস্তানের স্বস্তি বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু প্রথম সেশনের মাঝামাঝি ও শেষের দিকে দুটি উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কাও আশা জাগায়। আর লাঞ্চের পর আরও একটি উইকেট নিলে নাটক জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তে।
রিজওয়ান ও শফিকের জুটি ৭১ রানের বেশি হতে দেননি প্রভাত জয়াসুরিয়া। ৭৪ বলে ৪০ রান করে এলবিডব্লিউ হন রিজওয়ান, রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। আর শেষ দিকে আগা সালমানও (১২) লঙ্কান স্পিনারের কাছে উইকেট হারান নিরোশান ডিকবেলার গ্লাভসবন্দি হয়ে।
৫ উইকেটে ২৯৮ রান করে লাঞ্চে যায় পাকিস্তান। জয় থেকে ৪৪ রান দূরে ছিল। শ্রীলঙ্কার দরকার ছিল ৫ উইকেট। কিন্তু শফিক ১৩৯ রানে অপরাজিত থেকে স্বাগতিকদের পথের শক্ত কাঁটা হয়ে ছিলেন।
যদিও লাঞ্চের পর পঞ্চম বলেই হাসান আলীকে (৫) ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ফিরিয়ে ম্যাচে উত্তেজনা বাড়ান। ৩০৩ রানে নেই পাকিস্তানের ৬ উইকেট। ধনঞ্জয়া ও প্রভাত দুই প্রান্ত থেকে দুর্দান্ত টার্নে বল করে সফরকারীদের কোণঠাসা করে রেখেছিলেন। তবে তারা সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে যখন পাকিস্তানের দরকার ১৯ রান।
১৫১ রানে জীবন পান শফিক। ধনঞ্জয়ার বলে তার উঁচুতে নেওয়া শট সময় নিয়েও ধরতে পারেননি কাসুন রাজিথা, হাত ফসকে যায় বল। বৃষ্টিতে ম্যাচে বিরতি পড়ে, তখন ১১ রান দরকার পাকিস্তানের।
ঘণ্টাখানেকের বিরতির পর মাঠে নেমে আর সময় নষ্ট করেনি পাকিস্তান। নওয়াজ তার প্রথম চার মেরে জয় তরান্বিত করেন। শফিক জয়সূচক শট খেলেন সপ্তম বাউন্ডারিতে। ৪০৮ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে ইনিংস সেরা রান করেন তিনি।
৬ উইকেটে ৩৪৪ রান করেছে পাকিস্তান। এই জয়ে গলে ইতিহাস গড়লো তারা। এই মাঠে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড। আর নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতলো পাকিস্তান।