লোহিত সাগরে হুথিদের জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ১০

স্টাফ রিপোর্টার

ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, লোহিত সাগরে তাদের তিনটি নৌকায় হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। এতে তাদের ১০ যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছে। রোববার এক বিবৃতিতে হুথি গোষ্ঠী জানিয়েছে, তাদের ওই নৌকাগুলো নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এবং সামুদ্রিক নৌচলাচলে সুরক্ষার লক্ষ্যে কাজ করছিল।

তারা আরও জানিয়েছে, ওই নৌকাগুলো লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে বা দখলকৃত ফিলিস্তিনের বন্দরগুলোতে ইসরায়েলি জাহাজের চলাচল ঠেকাতে মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করছিল।

এর আগে রোববার সকালে মার্কিন সামরিক বাহিনী জানায়, তারা হুথি বিদ্রোহীদের হুমকি মোকাবিলায় টহল অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি লোহিত সাগরে একটি কন্টেইনার জাহাজে আক্রমণ চালিয়ে তিনটি নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছে।

মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আইজেনহাওয়ার এবং ইউএসএস গ্রেভলি থেকে বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার রোববার সকালে ইরান-সমর্থিত হুথিদের নৌকাগুলোতে গুলি করে। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে এবং অপর একটি নৌকা পালিয়ে গেছে বলে জানানো হয়। তবে হুথিদের নৌকা থেকেও মার্কিন হেলিকপ্টারে গুলি চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় গোষ্ঠী হুথি। তবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মূলত হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধের ঢেউ গিয়ে পৌঁছেছে লোহিত সাগরে। গাজায় বোমা হামলা শুরুর পরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে লোহিত সাগরে। কারণ বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি সেখানে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিকে সমর্থন দিচ্ছে ইরান। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থন জানাতেই সেখানে হামলা শুরুর ঘোষণা দেয় হুথি বিদ্রোহীরা। তাদের দাবি, গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দিতে হবে।

ইসরায়েলগামী যেকোনো জাহাজে হামলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ১৯ নভেম্বর ইসরায়েলের মালিকানাধীন একটি জাহাজে হামলা চালায় হুথি বিদ্রোহীরা। এরপর ১২ ডিসেম্বর ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত একটি এলাকা থেকে একটি নরওয়েজিয়ান ট্যাঙ্কারে হামলা চালানো হয়।

যদিও এর মালিকরা জানিয়েছেন, জাহাজটি ইসরায়েলগামী ছিল না। লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত করা হয়েছে ফ্রান্সের যুদ্ধজাহাজকেও। এরপর একে একে বেশ কিছু জাহাজে হামলা চালানো হয়। এতে লোহিত সাগর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। তবে এই সংকট দূর করার জন্য কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু অঞ্চলটিতে উত্তেজনা কোনোভাবেই থামছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *