লেনদেনের অর্ধেক দশ কোম্পানির দখলে

স্টাফ রিপোর্টার

মন্দার মধ্য দিয়ে গত সপ্তাহ পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি পতন হয়েছে সবকটি মূল্যসূচকের। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দৈনিক গড় লেনদেন ৩৪ শতাংশের ওপরে কমে গেছে।

এমন লেনদেন খরার বাজারে কিছুটা উল্টো পথে হেঁটেছে গুটি কয়েক কোম্পানি। এসব কোম্পানিগুলোর শেয়ার প্রতিদিন মোটা অঙ্কের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে লেনদেনে নেতৃত্ব দিয়েছে ১০টি কোম্পানি। ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় অর্ধেক দখল করেছে এ ১০ কোম্পানি।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে-বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জেনেক্স ইনফোসিস, শাহিনপুকুর সিরামিকস, অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সোনালী পেপার, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, জেনিমি সি ফুড, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং আমরা নেটওয়ার্ক।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫১টির। আর ১৯৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৯ শতাংশ।

বাকি দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ১১ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫০ শতাংশ। আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ৫ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ।

সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪২২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৬৪৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বা ৩৪ দশমিক ৯১ শতাংশ।

আর সপ্তাহজুড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১১১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ২৪৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ১ হাজার ১৩২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বা ৩৪ দশমিক ৯১ শতাংশ।

এমন লেনদেন খরার বাজারে লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানির শেয়ার সম্মেলিতভাবে লেনদেন হয়েছে ৯২৬ কোটি ৮২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। যা মোট লেনদেনের ৪৩ দশমিক ৯০ শতাংশ।

এর মধ্যে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪৩ কোটি ৮১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ। বড় অঙ্কের লেনদেন হলেও কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমে গেছে। গত সপ্তাহে এ কোম্পানির শেয়ার দাম কমেছে ৩ টাকা ৬০ পয়সা বা ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

সর্বোচ্চ লেনদেনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪০ কোটি ৩১ লাখ ৪ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ কোম্পানির শেয়ার দামও গত সপ্তাহে কমে গেছে। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ৭ টাকা ৬০ পয়সা বা ৭ দশমিক ১৬ শতাংশ।

১০৩ কোটি ৫৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাহিনপুকুর সিরামিকস। মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অবদান ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। লেনদেন বড় অবদান রাখলেও সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানির শেয়ার দাম কমেছে। গত সপ্তাহে কোম্পানিাটির শেয়ার দাম কমেছে ৪ টাকা ৯০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা-অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ৯৫ কোটি ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা, সোনালী পেপারের ৮৯ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার টাকা, সি পার্ল বিচ রিসোর্টের ৮৫ কোটি ৩১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ৭৪ কোটি ২৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা, জেনিমি সি ফুডের ৭২ কোটি ৮৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৬৪ কোটি ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকা এবং আমরা নেটওয়ার্কের ৫৭ কোটি ৩ লাখ ৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *