লাতিন আমেরিকা থেকে রেকর্ড জ্বালানি ক্রয় যুক্তরাষ্ট্রের
গত মাসে লাতিন আমেরিকা থেকে রেকর্ড পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ক্রয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির শুল্ক বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। মূলত পরিশোধক প্রতিষ্ঠানগুলো রুশ জ্বালানি তেলের বিকল্প হিসেবে এ অঞ্চল থেকে জ্বালানি তেল কিনছে। কারণ ২২ এপ্রিল রাশিয়ান জ্বালানি আমদানির ইতি টানে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের গালফ কোস্টের পরিশোধন প্রতিষ্ঠানগুলো জ্বালানি তেলকে ভারি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সম্পূরক হিসেবে ব্যবহার করে। প্রতিষ্ঠানগুলো গত মাসে নতুন সরবরাহকারী খুঁজতে শুরু করে। কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ান জ্বালানি তেল আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এছাড়া পরিশোধন প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছিল তার এক-চতুর্থাংশই সরবরাহ করেছে রাশিয়া। এ সময় দেশটি থেকে দৈনিক ৫ লাখ ২৪ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়। দেশটি আরো দৈনিক দুই লাখ ব্যারেল ইস্ট কোস্ট পরিশোধকদের কাছে সরবরাহ করেছে।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বাজারে রাশিয়ার হিস্যা কমে ২০ শতাংশে নেমে যায়। এ সময় লাতিন আমেরিকার দেশগুলো, বিশেষ করে মেক্সিকো আমদানীকৃত জ্বালানি তেলের ৩৫ শতাংশ সরবরাহ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মধ্যপ্রাচ্যের সরবরাহকারীদের হিস্যা ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
তথ্য বলছে, ভেনিজুয়েলার জ্বালানি তেল খাতের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া বা শিথিল করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি দেশটির সরকার সংশ্লিষ্টরা আলোচনা করেছে। এর মধ্য দিয়ে তিন বছর পর আবারো দুদেশের মধ্যে জ্বালানি বাণিজ্য শুরু হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এদিকে আমদানির ব্যবধান কমিয়ে আনতে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) সম্প্রতি শর্ট-টার্ম এনার্জি আউটলুক শীর্ষক এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র দৈনিক ১ কোটি ২৬ লাখ ব্যারেল করে জ্বালানি তেল উত্তোলনে সক্ষম হবে। বার্ষিক গড় উত্তোলনের দিক থেকে এটি হবে রেকর্ড সর্বোচ্চ।
এরই মধ্যে দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন ঊর্ধ্বমুখী। ইআইএর তথ্য বলছে, গত বছরের নভেম্বরেই দেশটির উত্তোলন দৈনিক ১ কোটি ১৮ লাখ ব্যারেলে পৌঁছে। বর্তমানেও এ ধারা অব্যাহত আছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর মিত্র জোট ওপেক প্লাসের উত্তোলন বাড়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য প্রক্ষেপণ কমিয়েছে ইআইএ।