রুশ এয়ারলাইনস খাতকে ১২০০ কোটি ডলার ভর্তুকি
ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় পশ্চিমা দেশগুলো। যার কারণে রাশিয়া তার এয়ারলাইন্স খাতকে সচল রাখার জন্য প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার ভর্তুকি ও ঋণ দিয়েছে। রয়টার্সের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।
রাশিয়া বাইরের দেশে তৈরি উড়োজাহাজের ওপর নির্ভরশীল ছিল। যার কারণে নিজেদের উড়োজাহাজ শিল্পকে চলমান রাখতে অভ্যন্তরীণভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন করতে শুরু করে। ফলে খাতটিকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
পশ্চিমা উড়োজাহাজ নির্মাতা এয়ারবাস ও বোয়িং ২০২২ সালের মার্চে সেবা ও খুচরা যন্ত্রাংশের সরবরাহ বন্ধ করে দেয় রাশিয়ায়। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এরোফ্লট ও অন্য রাশিয়ান এয়ারলাইনসগুলোর জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ সহায়তা বন্ধ করে দেয় তারা।
রাশিয়ায় বাজেট বাস্তবায়ন তত্ত্বাবধান করে অর্থ মন্ত্রণালয় ও অ্যাকাউন্টস চেম্বার। সংস্থাটির তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়া এরপর থেকে বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল খাতকে সহায়তা করার জন্য ১ দশমিক শূন্য ৯ ট্রিলিয়ন রুবেল (১২০৭ কোটি ডলার) ব্যয় করেছে। যার মধ্যে উড়োজাহাজ উৎপাদন ও এয়ারলাইনসগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা রয়েছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে এ খাতের পেছনে খরচ করা অর্থের প্রায় দ্বিগুণ এ বছর ব্যয় করা হয়েছে। সে বছর উড়োজাহাজ খাতে ব্যয় করা অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৪ হাজার ৭০০ কোটি রুবল। কভিডকালে উড়োজাহাজ ভ্রমণ ব্যাপক কমে যায়। এ শিল্প পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার প্রচেষ্টা চোখে পড়ার মতো।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘আমাদের বিমানের বহর অনেক বড়। এতে বিদেশী তৈরি উড়োজাহাজও রয়েছে। আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে এক হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরির পরিকল্পনা করছি। আমাদের নিজস্ব উড়োজাহাজ থাকবে। আরো কাজ করা প্রয়োজন।’
সুইস এভিয়েশন ইন্টেলিজেন্স প্রভাইডার সিএইচ-এভিয়েশনের মতে, রাশিয়ান এয়ারলাইনস বর্তমানে ৯৯১টি উড়োজাহাজ পরিচালনা করে। যার মধ্যে ৪০৫টি রাশিয়ায় তৈরি। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উৎপাদনকারী ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট করপোরেশনের তৈরি সুপারজেটের সংখ্যা ১৩৩টি। রাশিয়ায় উৎপাদিত উড়োজাহাজের মধ্যে রয়েছে টুপোলেভ, ইয়াকোভলেভ ও ইলিউশিন, যা বাণিজ্যিক ফ্লাইটের জন্য খুব কম ব্যবহৃত হয়।
রয়টার্সের অনুসন্ধানের প্রতিক্রিয়ায় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির অন্যতম মূল শিল্প উড়োজাহাজ তৈরির জন্য সহায়তা আগামী কয়েক বছর বজায় থাকবে। প্রধানত উড়োজাহাজ বিক্রি, উৎপাদনক্ষমতা সম্প্রসারণ ও বিক্রয়োত্তর সেবার ওপর জোর দিচ্ছে মন্ত্রণালয়।