রিয়ালের কাছে মেসিদের হার

রিয়াল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনার বহুল প্রতীক্ষিত লড়াই। এল ক্লাসিকোর ম্যাচটি যেমন উত্তেজনা ছড়ানোর তেমনই ছড়ালো। তবে ম্যাচের ফল কিন্তু বলছে না দুই দলের মধ্যে কেমন লড়াই হয়েছে।

রোববার রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মেসিদের বার্সেলোনাকে যে ২-০ গোলের পরিষ্কার ব্যবধানেই হারিয়েছে জিনেদিন জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ। এই জয়ে লা লিগার পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানটি আবারও দখলে নিয়েছে লস ব্লাঙ্কোসরা।

সাত ম্যাচ পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার বিপক্ষে জিতল রিয়াল। লিগে দুই ম্যাচ পর দেখা পেল জয়ের। আর টানা চার জয়ের পর হারল শিরোপাধারী বার্সেলোনা।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শুরু থেকেই জমে উঠেছিল এল ক্লাসিকোর লড়াইটি। সুযোগ মিস করেছে দুই দলই। তবে বার্সেলোনা বল দখলে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে এসে প্রাপ্ত সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করেছে রিয়াল।

ম্যাচের সপ্তম মিনিটে প্রথম সুযোগটা পায় রিয়াল। কিন্তু ডি বক্সের জটলার মধ্যে করিম বেনজেমা বল পেয়ে চোখের পলকে শট নিলেও সেটা বারের একটু ওপর দিয়ে চলে যায়। ১৫ মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের পাস থেকে বক্সের মধ্যে পাওয়া বল একইভাবে উঁচু শটে মিস করেন টনি ক্রুস।

২১তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিল বার্সেলোনাও। কিন্তু জর্দি আলবার নিচু ক্রস বিপজ্জনক জায়গায় পেয়েও বাঁ পায়ের আলতো ছোঁয়ায় বেশ ওপর দিয়ে মেরে দেন আঁতোয়া গ্রিজম্যান।

প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার বল নিয়ে বক্সে ঢোকার চেষ্টা করলেও রিয়ালের রক্ষণ দেয়ালে আটকে যান লিওনেল মেসি। ৩০ মিনিটে গোল করার ভালো একটি সুযোগ এসেছিল তার সামনে। কিন্তু গ্রিজম্যানের কাছ থেকে বল পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন আর্জেন্টাইন খুদেরাজ।

৩৪ মিনিটের মাথায় আরেকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে বার্সা। এবার বলতে গেলে খালি বক্স পেয়ে গিয়েছিলেন আর্থার। কিন্তু থিবো কর্তোয়াকে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার, এগিয়ে এসে বলটা সেভ করেন রিয়াল গোলরক্ষক।

এর চার মিনিট পর আরেকবার দলকে বাঁচান কর্তোয়া। এবার বুসকেতসের উঁচু করে বাড়ানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে বুলেট গতির শট নিয়েছিলেন মেসি। চোখের পলকে সেটি আটকে দেন রিয়াল গোলরক্ষক।

দ্বিতীয়ার্ধে নিশ্চিত একটি গোল বাঁচিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগানও। বক্সের একটু বাইরে থেকে ইসকোর বাঁকানো শট বাঁদিকে লাফ দিয়ে শূন্যে ভেসে এক হাতে বের করে দেন তিনি।

কপাল ভালো বলতে হবে বার্সেলোনার। ৬১ মিনিটে আরও একটি নিশ্চিত গোল থেকে বেঁচে যায় তারা। এবার দানি কার্ভাহেলের ক্রস বক্সের মধ্যে গোলরক্ষকের একদম সামনে পেয়ে হেড নিয়েছিলেন সেই ইসকো, স্টেগান সেটি ছুঁলেও বল চলে যাচ্ছিল জালের দিকে। ঠিক সেই সময়ে গোললাইনে দাঁড়িয়ে বলটি আটকে দেন পিকে।

তবে এরপর বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি রিয়ালকে। ৭২ মিনিটে ক্রুসের কাছ থেকে বল নিয়ে একাই বক্সের মধ্যে ঢুকে যান ভিনিসিউস জুনিয়র। বাঁদিক থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের আড়াআড়ি শট পিকে আটকানোর চেষ্টা করলেও পারেননি। চোখের পলকে সেটি জড়িয়ে যায় জালে, গোলরক্ষক ছিলেন নীরব দর্শকের ভূমিকায়।

৭৫ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া মেসিকে আটকে দেন মার্সেলো আর ভারানে। ৮৩ মিনিটে মেসির ফ্রি-কিকে হেড নিলেও বলটা লক্ষ্যে রাখতে পারেননি পিকে।

নির্ধারিত সময়ে ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা রিয়াল যোগ করা সময়ে আরও একবার হতাশায় ডোবায় বার্সেলোনাকে। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বদলি হিসেবে নেমে দারুণ এক গোল করেন মারিয়ানো। কোনাকুনি শটে টের স্টেগেনকে পরাস্ত করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ওই ২-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল।

এই জয়ে ২৬ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে উঠে গেছে জিনেদিন জিদানের দল। ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে এই ম্যাচে হারা তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *