রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে অটোমেশনের বিকল্প নেই

স্টাফ রিপোর্টার

দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪০ লাখ মানুষ কর পরিশোধ করেন। করদাতার সংখ্যা এত কম হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়ছে রাজস্ব আহরণ। নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে। এমন পরিস্থিতিতে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে অটোমেশনের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী নেতা ও রাজস্ব বোর্ডসংশ্লিষ্টরা। গতকাল এক কর্মশালায় তারা এসব কথা বলেন।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ‘আয়কর আইন ২০২৩:  করপোরেট করের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক কর্মশালাটির আয়োজন করে। ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালার শুরুতে ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের দেশের মোট জনগোষ্ঠীর অনুপাতে করদাতার হার অত্যন্ত কম, যেখানে ১৭ কোটি মানুষের এদেশে মাত্র ৪০ লাখ মানুষ কর প্রদান করে থাকে। এটি মোটেও কাম্য নয়। কর প্রদানের এ নিম্নহার বিদ্যমান করদাতাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে। এছাড়া করদাতাদের এ স্বল্পহার দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাকে শ্লথ করছে।’

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমাদের বিদ্যমান রাজস্ব প্রদান প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অটোমেশনের আওতায় আনা সম্ভব হলে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের হয়রানি কমবে। সেই সঙ্গে সম্ভাবনাময় নতুন করদাতাদের এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে করজাল আরো সম্প্রসারিত হবে।’

এ কর্মশালায় ‘আয়কর আইন ২০২৩’ সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের সম্যক ধারণা দেয়া হবে বলে জানান ঢাকা চেম্বার সভাপতি। এর ফলে নতুন আইনটি বোঝা সহজ হবে। বিশেষ করে উদ্যোক্তাদের করপোরেট কর পরিশোধে আরো উৎসাহিত করবে।

আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘আয়কর আইন-২০২৩-এর ১৬৩(২)(খ) ধারা অনুযায়ী কর্তন বা সংগৃহীত কর উৎসে করকে ন্যূনতম কর হিসেবে বিবেচনার বিধান রয়ে গেছে, যা প্রকৃতপক্ষে করপোরেট করের হারকে বৃদ্ধি করছে।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জয়েন্ট কমিশনার (কর অঞ্চল-১৫) ওয়াকিল আহমেদ বলেন, ‘২০২৩ সালে প্রায় চার লাখের বেশি করদাতা ই-টিন সার্ভিস ব্যবহারের মাধ্যমে কর প্রদান করেন। বিগত বছরে এ সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫০ হাজার। এতে প্রতীয়মান হয় যে, অটোমেশন প্রক্রিয়া করবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এনবিআরের জয়েন্ট কমিশনার (কর অঞ্চল-৪) মুরাদ আহমেদ ব্যবসয়ীদের ই-টিডিএস ব্যবস্থা আরো বেশি হারে ব্যবহারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিসিআইয়ের কাস্টমস, ভ্যাট অ্যান্ড ট্যাক্সেশন স্ট্যান্ডিং কমিটির উপদেষ্টা  স্নেহাশীষ বড়ুয়া। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব (ট্যাক্স এডুকেশন) বাপন চন্দ্র দাস বক্তব্য রাখেন। এ সময় ঢাকা চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা চেম্বারের সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০ জন প্রতিনিধি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *