রশিদের ব্যাটে নাটকীয় জয় গুজরাটের
লক্ষ্য ১৭০ রান। ৪৮ রানে গুজরাট টাইটান্সের নেই ৪ উইকেট। মুখে চওড়া হাসি দেখা যাচ্ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের কোচ স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের। দল যে দ্বিতীয় জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল তখন।
এমনকি ৮৭ রানে যখন ৫ উইকেট হারিয়েছে গুজরাট, তখনও ৪৪ বলে ৮৩ রান দরকার। শেষদিকে যেটা দাঁড়ায় ৩ ওভারে ৪৮। গুজরাটের সমর্থকরা তখন আশা ছেড়েই দিয়েছেন বলতে গেলে।
এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে এক ওভারে ঝড় তুললেন রশিদ খান। শেষটা করলেন ম্যাচের নায়ক ডেভিড মিলার। এই দুইজনের ব্যাটে চড়েই আইপিএলে আজ নাটকীয় এক জয় পেয়েছে গুজরাট টাইটান্স। শেষ ওভারে এক বল হাতে রেখে চেন্নাইকে ৩ উইকেটে হরিয়েছে তারা।
নাটকীয় এই ম্যাচে নাটক হয়েছে শেষ ওভারেও। ক্রিস জর্ডানের ওই ওভারে ১৩ রান দরকার ছিল গুজরাটের। প্রথম দুই বলে রান নিতে পারেননি মিলার। তৃতীয় বলে হাঁকান ছক্কা।
চতুর্থ বলটি মারতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচ হন মিলার। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায়, বলটি ছিল তার কোমড়ের ওপরে। ফলে ‘নো’ ডাকেন আম্পায়ার। ফ্রি-হিটে বাউন্ডারি তুলে নিতে ভুল করেননি সেট ব্যাটার। তার পরের বলে ডাবলস নিয়ে শেষ করেন ম্যাচ।
তার আগে ম্যাচটা হাতে নিয়ে আসার ‘বড় কাজ’ করেছেন রশিদ খান। শেষ ১৮ বলে যখন ৪৮ দরকার, ক্রিস জর্ডানের ওপর দিয়ে রীতিমত সুনামি বইয়ে দেন হার্দিক পান্ডিয়ার চোটে নেতৃত্ব পাওয়া আফগান অলরাউন্ডার। ওই ওভারে টানা চার বলে তিনটি ছক্কা, একটি চার হাঁকান রশিদ।
ডোয়াইন ব্রাভোর করা পরের ওভারের প্রথম বলেও মারেন একটি বাউন্ডারি। ব্রাভোর ওই ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন রশিদ, ২১ বলে ৪০ করে! তারপর তুলির শেষ আচড়টা দিয়েছেন মিলার। ৫১ বলে ৮ বাউন্ডারি আর ৬ ছক্কায় ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন প্রোটিয়া এই ব্যাটার।
এর আগে রিতুরাজ গাঁইকদের ৪৮ বলে ৭৩ আর আম্বাতি রাইডুর ৩১ বলে ৪৬ রানে ভর করে ৫ উইকেটে ১৬৯ রানের পুঁজি দাঁড় করায় চেন্নাই সুপার কিংস।
পুনেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একদমই ভালো ছিল না চেন্নাইয়ের। প্রথম দুই ওভারে তারা তুলতে পারে মাত্র ৭ রান। তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই রবিন উথাপ্পাকে (৩) এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মদ শামি।
রিতুরাজ গাঁইকদ তবু চালিয়ে খেলছিলেন। এর মধ্যে পঞ্চম ওভারে চেন্নাই হারিয়ে বসে তাদের আরেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার মঈন আলিকে (১)। আলজেরি জোসেফের বলে বোল্ড হন মঈন।
এরপর আম্বাতি রাইডুকে নিয়ে রিতুরাজের দারুণ এক জুটি। ১২ ওভারেই একশ ছোঁয় চেন্নাই। তৃতীয় উইকেটে ৫৬ বলে ৯২ রান যোগ করে ফেরেন রাইডু। জোসেফের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ৩১ বলে তিনি করেন ৪৬ রান।
এক ওভার পর রিতুরাজও সাজঘরের পথ ধরেন। ইয়াশ দয়ালকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ হন চেন্নাই ওপেনার। ৪৮ বলে গড়া তার ৭৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে ছিল ৫টি করে চার-ছক্কা।
এরপর শিভাম দুবে আর রবীন্দ্র জাদেজার ২২ বলে ৩৮ রানের জুটি। দুবে ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হন ১৭ বলে ১৯ করে। ১২ বলে ২ ছক্কায় ২২ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক জাদেজা।
গুজরাট টাইটান্সের আলজেরি জোসেফ ৩৪ রান খরচায় নেন ২টি উইকেট।