রবির রাজস্ব আয় ৯৯৫০ কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার

২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালে ভয়েসে ৭ এবং ডাটায় ২ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড। এর মাধ্যমে গত বছরে কোম্পানিটির মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ৯ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। তুলনা করলে বছর ব্যবধানে আয় বেড়েছে দশমিক ১ শতাংশ।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এর ভিত্তিতেই গত ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ডেভিডেন্ড (লভ্যাংশ) ঘোষণা করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটরটি।

কোম্পানিটি আলোচিত বছরের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড (লভ্যাংশ) ঘোষণা করেছে। আগামী ২১ এপ্রিল রবির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের শেষ প্রান্তিকের তুলনায় ২০২৪ সালের একই সময়ে ভয়েস রাজস্ব ১ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়লেও, ডাটা রাজস্ব ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। বাজার প্রতিযোগিতা, ডাটা প্যাকেজের মূল্যহ্রাস ও মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

২০২৪ সালে রবি সরকারকে ৬ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা দিয়েছে, যা মোট রাজস্বের ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ। শুধু শেষ প্রান্তিকেই প্রতিষ্ঠানটি রাজস্বের ৭০ শতাংশ সরকারকে পরিশোধ করেছে। ২০২৪ সালের কর-পরবর্তী মুনাফা ৭০৩ কোটি টাকা, যা ২০২৩ সালের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১ দশমিক ৩৪ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রবির পরিচালনা পর্ষদ প্রতি শেয়ার ১.৫০ টাকা হারে ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ সুপারিশ করেছে, যা কর-পরবর্তী মুনাফার ১১১ দশমিক ৮ শতাংশ।

রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম রিয়াজ রাশিদ বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য শেয়ারহোল্ডারদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা নিশ্চিত করা এবং গ্রাহকদের জন্য আরও উন্নত সেবা দেওয়া। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে আমরা অপারেশন দক্ষতা ও ডিজিটাল অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করছি।

তিনি বলেন, তবে সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানো এবং সিমের ওপর কর বৃদ্ধির কারণে ডিজিটাল সংযোগ সম্প্রসারণ ব্যাহত হতে পারে।

রবির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে নতুন সিমের ওপর কর ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করা হয়। ফলে নতুন গ্রাহক আকৃষ্ট করা রবির জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিযোগীরা নতুন গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে আগ্রাসী ভর্তুকিনীতি গ্রহণ করায় রবির বাজার অবস্থানও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে।

ফলে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকসংখ্যা ২০২৪ সালে ২০ লাখ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৬৭ লাখ। একই সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২১ লাখ কমে হয়েছে ৪ কোটি ২৬ লাখ। তবে ফোরজি ব্যবহারকারী ৫ লাখ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ দশমিক ৯ শতাংশ।

এদিকে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ রবি দেশে ১৮ হাজারের বেশি ফোরজি টাওয়ার স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে ৯৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ জনসংখ্যার জন্য ফোরজি কাভারেজ নিশ্চিত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রবির ইবিআইটিডিএ ১০ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৮১ কোটি টাকা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ইবিআইটিডিএ মার্জিন ৪ দশমিক ৮ শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে ৫১ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে।

তবে বছরের শেষ প্রান্তিকে ইবিআইটিডিএ ৩ দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যদিও বার্ষিক হিসাবে এটি দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ২০২৪ সালে রবি ১ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা মূলধনী বিনিয়োগ করেছে, যার মধ্যে চতুর্থ প্রান্তিকেই বিনিয়োগ ছিল ৪৪৬ কোটি টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *