যে কারণে সৌদিতে ৫০০ সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

সৌদি আরবে নতুন করে ৫০০ সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক আরও জোরালো করার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এরই মধ্যে দুই দফায় চুক্তি থেকে আংশিক সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। আর ইরানের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে উপসাগরীয় এলাকায় বিমানবাহী রণতরী, ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর সিএনএনের।

ইরানের হুমকি মোকাবেলায় ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ শুরুর অভিযোগ এনেছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক তেলবাহী ট্যাঙ্কারে বিস্ম্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে আসছে ওয়াশিংটন। তেহরান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। গত ২০ জুন ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক’ নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ড্রোন ভূপাতিত করে ইরানের সেনাবাহিনী।

প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়। তবে ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশের অভিযোগ নাকচ করে তারা দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক সীমার মধ্যে অবৈধভাবে তেহরান তাদের ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যেই সৌদি আরবে সেনা পাঠানোর ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেছে সিএনএন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, ট্রাম্প প্রশাসন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তর অংশে অবস্থিত প্রিন্স সুলতান বিমানঘাঁটিতে ৫০০ সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা জানিয়েছেন, বিমানঘাঁটিতে আগে থেকেই অল্প সংখ্যক সেনা রয়েছে। তবে ওই ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা মার্কিন প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাসহ রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিমানঘাঁটির উন্নয়নের জন্য আরও কিছু সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না সৌদি আরব: জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি আরবের স্থায়ী প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মুয়াল্লিমি বলেছেন, তার দেশ ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছে বলেও তিনি জানান। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ইয়েমেনসহ কোনো স্থানেই ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না সৌদি আরব। জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আরও বলেছেন, পবিত্র মক্কায় ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা ওআইসির গত জুনের বৈঠকের সময় তেহরানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তিনি আর কোনো ব্যাখ্যা দেননি।

সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত। তবে এ বিষয়টির জন্য দু’দেশের পক্ষ থেকেই উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজন রয়েছে।

আল মুয়াল্লিমি আরও বলেন, ইয়েমেনে যুদ্ধের তীব্রতা কমানোর সময় এসে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *