যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি বিক্রি টানা ১০ মাস ধরে নিম্নমুখী
যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। নভেম্বরে দেশটিতে পুরনো বাড়ির বিক্রি টানা দশম মাসে সংকুচিত হয়েছে। এর আগে ১৯৯৯ সালে এমন দীর্ঘ সময় ধরে বাড়ি বিক্রিতে পতন অব্যাহত ছিল। এ তথ্য ইঙ্গিত দেয়, জীবনযাত্রার উচ্চব্যয় এবং ক্রমবর্ধমান সুদের হারের মধ্যে মার্কিন নাগরিকরা বড় ধরনের কেনাকাটা এড়িয়ে চলছে। খবর এপি।
ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব রিয়েলটর্স (এনএআর) জানিয়েছে, নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো বাড়ির বিক্রি অক্টোবরের তুলনায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। গত মাসে দেশজুড়ে ৪১ লাখ বাড়ি বিক্রি হয়েছে। যদিও অর্থনীতিবিদরা বাড়ি বিক্রিতে আরো বেশি পতনের আশঙ্কা করেছিলেন। গত মাসে বাড়ি বিক্রির পরিমাণ এক বছর আগের তুলনায় ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। মহামারীর শুরুতে ২০২০ সালের মে মাসে বাড়ি বিক্রিতে পতনের হিসাব বাদ দিলে এ সংকোচনের হার ২০০০-এর দশকের পর সর্বোচ্চ।
বাড়ি বিক্রি কমে গেলেও দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যদিও কয়েক মাস আগের তুলনায় দাম বাড়ার গতি অনেক ধীর হয়েছে। গত মাসে বাড়ির দাম বছরওয়ারি গড়ে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে।
এনএআরের প্রধান অর্থনীতিবিদ লরেন্স ইউন বলেন, গত মাসে বিক্রীত মোট বাড়ির প্রায় এক-চতুর্থাংশ চাওয়া মূল্যের বেশিতে বিক্রি হয়েছে। আমাদের এ অদ্ভুত আবাসন বাজারে ক্রেতা ও লেনদেন কমে গিয়েছে। তবে সীমিত সরবরাহের কারণে বাড়ির দাম বাড়ছে এবং সেগুলো দ্রুত বিক্রি হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে গেছে বন্ধকি সুদের হারও। গত ৩০ বছরের বন্ধকি ঋণের গড় সুদহার জানুয়ারির শুরুতেও ৩ শতাংশের সামান্য বেশি ছিল। গত এক বছরে এ হার দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। উচ্চ সুদহার বাড়ি কিনতে আগ্রহীদের নিরুৎসাহিত করছে। তবে গত কয়েক সপ্তাহে বন্ধকি ঋণের সুদের হার কিছুটা কমেছে। নভেম্বরের শুরুতে এ হার গড়ে ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে ছিল।
এদিকে পুরনো বাড়ি বিক্রি কমলেও গত মাসে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে নতুন বাড়ি বিক্রি বেড়েছে। একক পরিবারের বসবাস উপযোগী নতুন বাড়ির বিক্রি টানা দ্বিতীয় মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। বাণিজ্য বিভাগ জানিয়েছে, নভেম্বরে ৬ লাখ ৪০ হাজার ইউনিট নতুন বাড়ি বিক্রি হয়েছে। এ সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। এর আগে অক্টোবরে বিক্রি হওয়া নতুন বাড়ির সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৫ হাজার ইউনিট।