যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে নেতৃস্থানীয় হয়ে উঠছে ব্রাজিল

স্টাফ রিপোর্টার

চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে বিশ্বের শীর্ষ তুলা রফতানিকারক দেশে পরিণত হতে পারে ব্রাজিল। পণ্যটির আবাদ ও উত্পাদন বাড়ায় এমন সম্ভাবনা দেখছেন লাতিন আমেরিকার দেশটির খাতসংশ্লিষ্টরা। ব্রাজিলের তুলা উত্পাদক অ্যাসোসিয়েশন এমনটা জানিয়েছে।

খাদ্য উত্পাদক দেশগুলোর অগ্রদূত হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল। তুলা রফতানিতে শীর্ষ হয়ে ওঠার মাধ্যমে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছে দেশটি। ব্রাজিল এরই মধ্যে সয়াবিন উত্পাদন ও রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিয়ে নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে উঠে এসেছে। ভুট্টা রফতানিতেও শিগগিরই শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় প্রথম স্থান দখল করে নেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ তিন তুলা উত্পাদক দেশ চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। উত্পাদনে চতুর্থ অবস্থানে থাকলেও রফতানিতে দ্বিতীয় ব্রাজিল। দেশটির তুলা উত্পাদক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান জুলিও সিজার বলেন, আমরা শিগগিরই বিশ্বের শীর্ষ তুলা রফতানিকারক দেশে পরিণত হব এবং সম্ভবত তা এ বছরই সম্ভব হবে।

উত্পাদকদের দেয়া তথ্য বলছে, চলতি বছর ব্রাজিলে ১৬ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হতে পারে। এক বছরের ব্যবধানে আবাদ ১ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের উত্পাদকরা তুলনামূলক বেশি লাভজনক ফসল আবাদকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। তুলার পরিবর্তে তাদের পছন্দ ভুট্টা, সয়াবিন ও গম। ফলে দেশটির উত্পাদন প্রবৃদ্ধি এ বছর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স গত মাসে এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৩ সালে যদি যুক্তরাষ্ট্রে তুলার আবাদ ৩০ শতাংশ কমে, তাহলে ব্রাজিল শীর্ষ রফতানিকারক দেশ হওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের জন্য অন্যান্য কৃষিপণ্য উত্পাদনের ভালো সুযোগ থাকায় বিষয়টিকে অসম্ভব বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা।

ব্রাজিলের তুলা উত্পাদক অ্যাসোসিয়েশন মনে করছে, ২০২৩ সালে দেশটির তুলা রফতানি ২২ শতাংশ বেড়ে ২২ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। উত্পাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২৯ লাখ ৫০ হাজার টনে, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ।

তুলা উত্পাদনে ব্রাজিলের কৃষকদের অনেক বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। ঊর্ধ্বমুখী ব্যয় সত্ত্বেও এ বছর উত্পাদন বাড়াতে প্রস্তুত খাতসংশ্লিষ্টরা। উদ্দেশ্য এশিয়ার বাজার, বিশেষ করে চীনে রফতানি আরো গতিশীল করা।

বিশ্ববাজারে প্রতি বছর যে পরিমাণ তুলা সরবরাহ হয়, তার ২০ শতাংশই আসে ব্রাজিল থেকে। অর্থমূল্যের দিক থেকে দেশটির সপ্তম শীর্ষ রফতানি পণ্য এটি। রফতানিযোগ্য তুলার ৯৯ শতাংশই বিক্রি হয় এশিয়ার বাজারে। এর মধ্যে শীর্ষ রফতানি গন্তব্য চীন, ভিয়েতনাম, তুরস্ক ও বাংলাদেশ। এছাড়া পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও থাইল্যান্ড দেশটি থেকে তুলা আমদানি করে।

তুলা উত্পাদক অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ) মার্সেলো দুয়ার্তে বলেন, গবেষণা, উন্নত প্রযুক্তি, মাঠ ব্যবস্থাপনা, ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে আমরা আমাদের পণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন করেছি। আমাদের তুলা বিশ্ববাজারে সেরা অবস্থানে রয়েছে।

বিশ্ববাজারে ব্রাজিলিয়ান তুলার প্রচারণা চালাতে এপেক্সব্রাজিল নামে একটি সংস্থা কাজ করছে। উত্পাদক অ্যাসোসিয়েশন এটিকে সহায়তা করছে। প্রচারণার পাশাপাশি উত্পাদকদের রফতানি বাজার খুঁজে পেতে সাহায্য করছে সংস্থাটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *