মে মাসের বেতন হয়নি ২৩ শতাংশ কারখানায়

স্টাফ রিপোর্টার

ঈদের ছুটির আগেই শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের বোনাস এবং জুনের ১৫ দিনের বেতন পরিশোধে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনা রয়েছে। সেখানে গত মে মাসের বেতনই পরিশোধ করেনি শিল্প অধ্যুষিত এলাকার ২৩ শতাংশ কারখানা। শিল্পসংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দেশের শিল্প অধ্যুষিত এলাকা রয়েছে মোট আটটি—আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, খুলনা, কুমিল্লা ও সিলেট। এসব এলাকায় মোট কারখানা রয়েছে ৯ হাজার ৯১৫টি। গতকাল বেলা ২টা পর্যন্ত কারখানাগুলো ৭৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেতন পরিশোধ করেছে। বাকি ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ কারখানা এখনো তাদের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি।

শিল্প অধ্যুষিত এলাকাগুলোর মধ্যে মে মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে এমন কারখানার সংখ্যা ২ হাজার ৩১৩। এর মধ্যে পোশাকপণ্য প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্য ২৮১টি কারখানায় বেতন বকেয়া। পোশাক খাতের আরেক সংগঠন বিকেএমইএ সদস্যদের বেতন বকেয়া থাকা কারখানার সংখ্যা ১৬৮টি। সুতা ও কাপড় উৎপাদনকারী বস্ত্র খাতের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সদস্য ১০৬টি কারখানার শ্রমিকদের মে মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) আওতাভুক্ত ১২টি কারখানায়ও এখনো গত মাসের বেতন দেয়া হয়নি।

শিল্প অধ্যুষিত আট এলাকায় পাটকল রয়েছে মোট ৯০টি। এর মধ্যে মে মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে এমন কারখানার সংখ্যা ছয়। শিল্প এলাকাগুলোয় কোনো সংগঠন বা কর্তৃপক্ষের আওতায় নেই— এমন কারখানা আছে ৬ হাজার ৭৫১টি। এর মধ্যে বেতন পরিশোধ হয়নি ২ হাজার ৩১৩টি কারখানায়ই।

জাতীয় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) ৭৫তম এবং আরএমজি টিসিসির ১৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয় ৬ জুন। সেখানে শিল্প-কারখানার বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে আলোচনা করেন সংশ্লিষ্টরা। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। সভা শেষে তিনি ঈদুল আজহার ছুটির আগেই শ্রমিকদের ঈদ বোনাস এবং জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন দেয়ার জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘ঈদ যেহেতু মাসের শেষদিকে তাই মালিকরা ঈদ বোনাসের সঙ্গে চলতি জুন মাসের ১৫ দিনের বেতনটাও পরিশোধ করবেন।’ শ্রমিক নেতাদের জুন মাসের পূর্ণ বেতন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘১৫ দিনের বেতন বাধ্যতামূলক। তবে কোনো মালিকের সক্ষমতা থাকলে পূর্ণ মাসেরও বেতন দিতে পারবেন। সেটা বাধ্যতামূলক নয়।’ প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘গার্মেন্টস যেহেতু রফতানিমুখী শিল্প এবং ঈদে ঘরমুখো মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে মালিকরা উভয় বিষয় মাথায় রেখে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ছুটির বিষয়টি নির্ধারণ করবেন।’

সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এরই মধ্যে জুনের অর্ধেক বেতন ও ঈদের বোনাস পরিশোধ করেছে বেশকিছু কারখানা। গতকাল দুপুর পর্যন্ত শিল্প অধ্যুষিত আট এলাকার ৫১টি কারখানা তাদের শ্রমিকদের জুনের ১৫ দিনের বেতন পরিশোধ করেছে বলে জানা গেছে। ঈদের বোনাস পরিশোধও শুরু হয়েছে শিল্প-কারখানাগুলোয়। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ২৪টি কারখানা শ্রমিকদের বোনাস দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *