মূল্য ছাড়েও চীনের বাজারে ধুঁকছে নতুন আইফোন
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধ ও প্রযুক্তি ব্যবহারে বিভিন্ন বিধিনিষেধ ও আইনের কারণে চীন এখন অনেকটাই পিছিয়ে। এ দ্বন্দ্বের মধ্যে আইফোন ১৪ উন্মোচন করে অ্যাপল। চীনের বাজারে বিক্রি বাড়াতে কুপারটিনোভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্টটি মূল্য ছাড় দিলেও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্মার্টফোন বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। খবর ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
জেফেরিসের তথ্যানুযায়ী, গত কয়েক সপ্তাহে চীনে আইফোন বিক্রি আগের বছরের তুলনায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমেছে। এডিসন লি পরিচালিত একদল বিশ্লেষক এক নোটে জানান, প্রথম ৩৮ দিনে চীনে আইফোন ১৪ সিরিজের চারটি স্মার্টফোনের বিক্রি আগের ভার্সনের তুলনায় ২৮ শতাংশ কম। সাম্প্রতিক তথ্যানুযায়ী বিক্রির হার নেমে ৩৩ শতাংশের কাছাকাছি চলে গেছে। বেশি দামের প্রো ভ্যারিয়েন্টগুলো নিয়ে চলতি বছর আশা প্রকাশ করা হলেও সেগুলোও প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
চলতি বছর ইলেকট্রনিকস ও প্রযুক্তিপণ্য ক্রয়ে গ্রাহক ব্যয় মহামারীর সময়ের তুলনায় অনেক কমে গেছে। চীনের পাশাপাশি বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সেলফোন, ডিসপ্লে ও মেমোরি উৎপাদনে বিশ্বের অন্যতম প্রতিষ্ঠান স্যামসাং ইলেকট্রনিকস জানায়, যন্ত্রাংশের ব্যবসায় প্রভাব পড়ার কারণে চীনে তাদের স্মার্টফোন বিক্রি কমে গেছে। সরবরাহের দিক থেকে দেশটির অ্যাপলকে বড় ধরনের সমস্যার সামনে দাঁড় করিয়েছে। চলতি সপ্তাহে ঝেংঝুতে অবস্থিত আইফোন অ্যাসেম্বল কারখানায় কভিড-১৯-এর সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধ ও লকডাউন আরোপ করা হয়েছে।
জেফেরিসের আগের এক জরিপের তথ্যানুযায়ী, চীনের স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো চলতি বছর স্মার্টফোন বিক্রিতে পতনের মুখে পড়ার বিষয়ে জানিয়েছিল। তবে সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে অ্যাপল তাদের আকর্ষণ ধরে রাখতে পেরেছে এবং বিক্রি ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে। এ বিষয়ে অ্যাপলের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রথম কয়েক সপ্তাহে অ্যাপলের নতুন আইফোন বিক্রির প্রতিবেদন বছরের বাকি সময়ের জন্য ডিভাইস উৎপাদন ও মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে।
নোটে লি ও তার সহকর্মীরা জানান, গত বছর টিমল থেকে আইফোন ১৩ সিরিজের ডিভাইসগুলো কেনার সময় গ্রাহকরা কোনো ছাড়ই পায়নি। কিন্তু চলতি বছর সবার জন্যই অ্যাপ মূল্যহ্রাস ও ছাড়ের সুবিধা চালু করেছে। বর্তমানে ব্যবহূত স্মার্টফোনের বাজার বাড়ছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ইলেকট্রনিকস পণ্য ক্রয়ে গ্রাহকদের ব্যয় কমেছে। এ কারণে বেসিক মডেলে উল্লেখযোগ্য হারে মূল্য ছাড় দিলেও তা সেভাবে আকর্ষণ তৈরি করতে পারবে না বলেও জানান বিশ্লেষকরা।