মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস বাড়াল জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক
মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাসে পরিবর্তন এনেছে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিত্যপণ্যের দাম আরো উচ্চ হারে বাড়ার আভাস দিয়েছে ব্যাংক অব জাপান (বিওজে)। টেকসই মূল্যস্ফীতি থেকে জাপানের বেরিয়ে আসার অংশ হিসেবে এ পরিবর্তন আসতে পারে। খবর কিয়োদো নিউজ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি আগামী অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও সংশোধন করেছে এবং তিন মাস আগের তুলনায় অর্থনীতির উন্নয়নে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে সামনের বছরগুলোয় মূল্যস্ফীতির হার ২ শতাংশের নিচে থাকলেও জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের শিথিল মুদ্রানীতি বহাল রাখার বিষয়ে অনড় থাকবে। বিশ্বের অন্য প্রতিযোগী দেশগুলো যখন সংকটকালীন মুহূর্ত নীতি থেকে বেরিয়ে আসছে তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্তের কথা জানাল।
টোটান রিসার্চের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইজুরু কাতো বলেন, ইয়েনের অবমূল্যায়নে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এটা যদি সরকারের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি না করে তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভবিষ্যতেও বর্তমান নীতিতে অটল থাকবে। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকটিকে নীতিমালা নির্ধারণে সহায়তা করবে।
দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বহুল প্রতীক্ষার অংশ হিসেবে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি সুদের হার দশমিক ১ শতাংশের নিচে বহাল রাখার কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি সুদের হার শূন্য শতাংশে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
প্রান্তিকের প্রতিবেদনে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া বছরের জন্য মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস আগের দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত করেছে। পাশাপাশি ২০২৩ অর্থবছরের জন্য মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস ১ থেকে ১ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত করেছে।
এক প্রতিবেদনে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, দামের ঝুঁকি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেখানে গত অক্টোবরে ব্যাংক জানিয়েছিল, দামের তারতম্যের ঝুঁকি নেতিবাচক পর্যায়ের দিকে রয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির ফলে জাপানিদের ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশা মাঝারিভাবে বাড়ছে। পাশাপাশি বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বেশি থাকলে দেশেও এর প্রভাব পড়বে। কভিড-১৯ মহামারীর সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ায় জাপানের অর্থনীতি খুব দ্রুত পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে মার্চের শেষ হওয়া বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পূর্বাভাস হ্রাস করেছিল ব্যাংকটি। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামগ্রিকভাবে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, তা সরবরাহ চেইনসহ পুরো ব্যবসায়িক খাতে প্রভাব ফেলেছিল।
সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের কারণে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরবর্তী অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি হার অক্টোবরে দেয়া ২ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত করেছিল।