মুসলিমদের নির্যাতন বন্ধ করুন : চীনকে তুরস্ক

চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর একজন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীর মৃত্যুর পর চীনকে ডিটেনশন ক্যাম্প অর্থাৎ বন্দিশিবির বন্ধ করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক। চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের বন্দিশিবিরে আটক অবস্থায় আট বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুরেহিম হেয়িত নামে ওই শিল্পীর মৃত্যুর প্রেক্ষিতে এমন আহ্বান জানালো তুরস্ক।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, বন্দিশিবিরগুলোতে সংখ্যালঘু মুসলিমদেরকে আটক রেখে নির্যাতন করছে চীন। উল্লেখ্য, জিনজিয়াংয়ের ওই বন্দিশিবিরে সংখ্যালঘু দশ লাখ উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানুষকে আটক করে রেখেছে চীন সরকার।

তিনি আরও বলেন, ‘বন্দিশিবির ও পুনঃশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীতে পদ্ধতিগত নির্যাতনের নতুন নজির তৈরি করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। যা মানবতার জন্য লজ্জাকর।’ তাছাড়া এ ধরনের মানবিক বিপর্যয় বন্ধে জাতিসংঘকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

সঙ্গীত বিষয়ে ডিগ্রিধারী আবদুরেহিম হেয়িত ছিলেন মুসলিম জনগোষ্ঠীর জনপ্রিয় শিল্পী। তাকে ‘জনক’ শিরোনামে একটি গানের জন্য আটক করা হয়। গানে ব্যবহৃত ‘যুদ্ধের শহীদেরা’ শব্দ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় চীন কর্তৃপক্ষ। হেয়িত এ গানের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদকে উসকে দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে তাকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়ে বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়। সেখানে সাজা খাটার দুই বছরের মাথায় সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে তার।

তবে উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে চীন। তারা বলছে, জিনজিয়াংয়ের ওই বন্দিশিবিরগুলো মূলত পুনঃশিক্ষা কেন্দ্র। ফ্রিডম ওয়াচের মতে, চীন হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম ধর্মীয় নিপীড়ক দেশ। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা না থাকায় এসব নিপীড়নের গোঙানির শব্দ বিশ্ববাসী খুব একটা জানতে পারে না।

উইঘুর জাতি মূলত স্বাধীন পূর্ব তুর্কিস্তানের অধিবাসী। পূর্ব তুর্কিস্তান প্রাচীন সিল্ক রোডের পাশে অবস্থিত মধ্য এশিয়ার একটি দেশ, যার চতুর্পাশ্বে চীন, ভারত, পাকিস্তান, কাজাখস্তান, মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়ার অবস্থান। এ অঞ্চলের বেশির ভাগ দেশেই উইঘুর সম্প্রদায়ের বাস রয়েছে।

শনিবার ওই বিবৃতি দেয়ার পর তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হামি অকসয় বলেন, ‘এটা আর গোপন কোনো কথা নয় যে, চীনে ১০ লাখেরও বেশি সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের বিধিবহির্ভূতভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে। বন্দিশিবিরে তাদেরকে নির্যাতন ও রাজনৈতিকভাবে মগজ ধোলাই করা হচ্ছে। তাছাড়া যাদেরকে বন্দি করা হয়নি তারাও চাপের মধ্যে আছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *