মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় ভারত-ইইউ
সম্প্রতি ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আবারো আলোচনা শুরু করেছে। ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছার প্রত্যাশা দুই পক্ষের। খবর রয়টার্স।
ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার ইইউ। অন্যদিকে ইইউর ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক অংশীদারদের তালিকায় ভারতের অবস্থান দশম। ২০০৭ সালে ভারত ও ইইউর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। তবে আলোচনা বেশি অগ্রসর না হওয়ায় ২০১৩ সালে তা স্থবির হয়ে পড়ে। এর আট বছর পর গত বছরের মে মাসে ফের আলোচনা চালাতে একমত হন ভারত ও ইইউর নেতারা। এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানান, দুই পক্ষের অংশীদারত্ব একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা হবে।
ইইউর বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডমব্রোভসকিস বলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিটিতে সব ধরনের বাণিজ্যিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মাবলির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চুক্তিটি হবে। আগামী দশকে ইইউর জন্য ভারতের সঙ্গে অংশীদারত্ব অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে। পরবর্তী আলোচনা বৈঠক ২৭ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে।
বিনিয়োগ ও আঞ্চলিক কৃষিখাদ্য সুরক্ষায় দুপক্ষের মধ্যে পৃথক আলোচনা হবে। আলোচনার ওপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছবে ইইউ-ভারত।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রে এ চুক্তি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বাড়াতে গুরুত্ব বহন করবে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্দেশ্য জোটটির। মূলত ওই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুবিধা নেয়ার প্রত্যাশা ইইউর।
এ চুক্তির মাধ্যমে পশ্চিমা মহলের সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের কূটনৈতিক সম্পর্কও জোরদার হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এশিয়ায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের প্রভাবকে টক্কর দিতে চুক্তিটি কাজ করবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করার লক্ষ্য রয়েছে সাবেক ইইউ সদস্য যুক্তরাজ্যেরও।
ভারতীয় বাজারে প্রবেশ সহজ করতে শুল্কহার কমানোর বিষয়েও জোর দিতে পারে ইইউ। গাড়ি ও অ্যালকোহল ছাড়াও চিজের মতো বেশ কয়েকটি কৃষিজাত খাদ্যপণ্যও বাণিজ্য চুক্তির অন্তর্ভুক্ত হবে। অন্যদিকে ইইউ জোটভুক্ত দেশগুলোয় ভারতীয় পেশাদার কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা পাওয়া সহজ করার প্রত্যাশা ভারতের।
এদিকে যেকোনো চুক্তি করতেই টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য থাকে ইইউর। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে পরিবেশের টেকসই উন্নয়ন, শ্রমিকদের উন্নয়ন ইত্যাদি। ভারতের সঙ্গে চুক্তিটিও এ লক্ষ্যের ব্যতিক্রম হবে না বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।