মিঠামইন হাওর ভ্রমণ করতে চাইলে যা করবেন
কিশোরগঞ্জ জেলা হাওর এলাকার জন্য বিখ্যাত। এর অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এই হাওর থেকেই আসে। শুধু অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই নয় এই হাওর এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও অনেক জনপ্রিয়। হাওর-বাওর , নদী , সমতলভূমি ও ভাটির বৈচিত্র্যময় ভূ-প্রকৃতির একটি বিস্তীর্ণ জেলা কিশোরগঞ্জের রূপ সুধা গ্রহণ করতে সারাদেশ থেকেই এখানে পর্যটকেরা আসে। নিকলি, অষ্টগ্রাম, ইটনা হাওরের হাওরের পাশাপাশি এখানকার আরেকটি দৃষ্টিনন্দন হাওর হচ্ছে মিঠাইন হাওর। যা মিঠামইন উপজেলায় অবস্থিত।
মিঠাইন এর উত্তরে ইটনা ও আজমিরিগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে অষ্টগ্রাম উপজেলা, পূর্বে বানিয়াচং ও অষ্টগ্রাম, পশ্চিমে করিমগঞ্জ ও নিকলী উপজেলা।
যতদূর চোখ যাবে এই হাওরের কোলে কেবল পানি আর পানিই চোখে পড়বে। উপরে নীল আকাশ জুড়ে সাদা কালো মেঘের আনাগোনা আর নিচে অবিরাম জলে তার প্রতিচ্ছবি ভেসে ভেসে উঠছে।
এমন মনভোলানো দৃশ্য আর দিগন্তের তটরেখায় ছোট ছোট গ্রাম এখানে দেখতে পাবেন। মাথার উপর দিয়ে কখনো চলে যাচ্ছে সাদা বকের দল, আর এখানে সেখানে ভেসে থাকা জলজ গাছ। জেলেদের জীবন আর জলের কোলে খেলা করা রোদ আর দিগন্তের অথৈ জলরাশির দৃশ্য মন ভরিয়ে দেবে আনন্দে।
এটি মূলত একটি প্রাচীন জনপদ অঞ্চল। মিঠামইন আরো কয়েকটি নামেও পরিচিত- মিঠামন, মিটামইন বা মিটামন বলে অনেকে একে উচ্চারণ করে থাকে। ধারণা করা হয় পার্শ্ববর্তী এলাকায় একসময় প্রচুর মিষ্টি বা মিঠা রসের খাগড়া গাছের বন ছিলো বলে একে এই নামে ডাকা হয়।
যাবার উপায়:
ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে করে কিশোরগঞ্জ সদরে যেতে পারেন। ট্রেনে করেই সুবিধা। ঢাকা থেকে এগারো সিন্দুর প্রভাতি ট্রেন বুধবার ব্যতীত সপ্তাহের অন্যদিন গুলোয় কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এটি সকাল ৭.১৫ মিনিটে ছেড়ে যায় এবং সাড়ে তিন ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন কিশোরগঞ্জে। সদরে নেমে সি এন জিতে করে চলে আসবেন চামড়াঘাটে। চামড়াঘাট থেকে মিঠামইনের উদ্দেশ্যে স্টীমার রয়েছে। চাইলে রিজার্ভ ও করতে পারেন। সময় লাগবে দেড় ঘণ্টা প্রায়।
থাকার ব্যবস্থা:
ভালো ভাবে থাকতে হলে কিশোরগঞ্জ সদরে ফিরে আসতে হবে আপনাকে। এখানে ভালো মানের বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়া মিঠামইনে উপজেলা পরিষদের ডাক বাংলোয় থাকতে পারেন। আর একেবারে থাকতে হলে মিঠামইন বাজারে কয়েকটি হোটেল ও গেস্ট হাউজ আছে।
খাওয়া দাওয়া বলতে স্থানীয় বাজারে হাওরের বিভিন্ন তাজের মাছের স্বাদ নিতে পারেন।
আশপাশের দর্শনীয় স্থান:
আশপাশের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে _
– মালিকের দরগা
– দিল্লির আখড়া
– রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের বাড়ি
টিপস:
মিঠামইনের যাওয়ার উপযুক্ত সময় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর। আর ভ্রমণে হাওরে কোন ধরণের অপচনশীল দ্রব্য বা পরিবেশ বিনষ্টকারী কিছু পেলে পরিবেশের সৌন্দর্য নষ্ট করবেন না।
সুত্রঃ ট্রাভেলবিডি