মালয়েশিয়ায় পাম অয়েল মজুদ সর্বোচ্চে

চলতি বছর মালয়েশিয়ার বাজারে পাম অয়েলের রেকর্ড দরপতন ঘটেছে। বাড়তি উৎপাদনের বিপরীতে রফতানি চাহিদা তুলনামূলক শ্লথ থাকায় পণ্যটির দাম কমতে কমতে গত অক্টোবর-নভেম্বরে টনপ্রতি ৫০০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

এর মধ্যেই  দেশটিতে পাম অয়েলের মজুদ বৃদ্ধির খবর এসেছে। গত নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় পাম অয়েলের সমাপনী মজুদ আগের তুলনায় বেড়ে ৩০ লাখ টন ছাড়িয়েছে বলে সর্বশেষ মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মালয়েশিয়ান পাম অয়েল বোর্ড (এমপিওবি)।

ফলে দেশটিতে পণ্যটির মজুদ প্রায় ১৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। মজুদ বৃদ্ধির এ খবরে মালয়েশিয়ার বাজারে পাম অয়েলের দামে বড় ধরনের পতন দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। খবর স্টার অনলাইন।

রাষ্ট্রায়ত্ত এমপিওবির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় পাম অয়েলের সমাপনী মজুদ দাঁড়িয়েছে ৩০ লাখ ৭ হাজার টনে, যা আগের মাসের তুলনায় ১০ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।

গত অক্টোবরে দেশটিতে পাম অয়েলের সমাপনী মজুদ ছিল ২৭ লাখ ২০ হাজার টন। সেই হিসাবে, এক মাসে মালয়েশিয়ায় পণ্যটির মজুদ বেড়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার টন। বিগত ১৮ বছরের মধ্যে এটিই মালয়েশিয়ায় পাম অয়েলের সমাপনী মজুদের সর্বোচ্চ মাসভিত্তিক রেকর্ড।

মালয়েশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ পাম অয়েল উৎপাদনকারী ও রফতানিকারক দেশ। চলতি বছরের নভেম্বরে দেশটিতে পাম অয়েল উৎপাদন আগের মাসের তুলনায় সামান্য কমেছে।

এমপিওবির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় সব মিলিয়ে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টন পাম অয়েল উৎপাদন হয়েছে, যা আগের মাসের তুলনায় ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কম। তবে বছরের মাঝামাঝি সময়ের তুলনায় পণ্যটির উৎপাদনের এ পরিমাণ পর্যাপ্ত।

এদিকে চলতি বছরের নভেম্বরে মালয়েশিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েল রফতানি আগের মাসের তুলনায় ১২ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে এমপিওবি।

মালয়েশিয়া থেকে রফতানি হওয়া পাম অয়েলের বড় ক্রেতা ভারত, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো। প্রতি বছর শীত মৌসুমে এসব দেশে পণ্যটির চাহিদা কমে যায়।

এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি। এ কারণে শীত শুরুর আগে থেকে মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের রফতানি বাজারে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে, যা আগের কয়েক মাস অব্যাহত থাকতে পারে। রফতানি বাড়াতে নভেম্বরের ধারাবাহিকতায় ডিসেম্বরেও বিনা শুল্কে পাম অয়েল রফতানির ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।

একদিকে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় পর্যাপ্ত উৎপাদন, অন্যদিকে শীত মৌসুমে রফতানি চাহিদা কমে যাওয়ায় মালয়েশিয়ায় পাম অয়েলের মাসভিত্তিক সমাপনী মজুদ বেড়ে প্রায় ১৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে মালয়েশিয়ার বাজারে পাম অয়েলের দাম পড়তির দিকে। রেকর্ড মজুদের খবরে পণ্যটির দাম আরো কমতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *