মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি ছয় মাসের সর্বনিম্নে

স্টাফ রিপোর্টার

অক্টোবরে কমে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। এ সময় দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ৬ হাজার ৭১০ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ পরিমাণ ঘাটতি স্পর্শ করার পর এটি গত ছয় মাসের সর্বনিম্ন পরিমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির প্রবৃদ্ধির বিপরীতে রফতানি প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতিতে এ উন্নতি লক্ষ করা গেছে। খবর এপি।

অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পূর্ববর্তী মাসের তুলনায় ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ কম ছিল। সেপ্টেম্বরে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৮ হাজার ১৪০ কোটি ডলার। সম্প্রতি মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক তথ্যে এমনটা দেখা যায়। চলতি বছরের এপ্রিলে ৬ হাজার ৬২০ কোটি ডলার বাণিজ্য ঘাটতির পর এটি সবচেয়ে ছোট আকারের ঘাটতি। অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি বেড়ে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। অর্থের পরিমাণে এটি ছিল ২২ হাজার ৩৬০ কোটি ডলার। এ সময়ে আমদানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে দশমিক ৯ শতাংশ, যার পরিমাণ ২৯ হাজার ৭০ কোটি ডলার।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে জট খুলতে শুরু করায় মার্কিন রফতানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এ পরিস্থিতি বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি ঘাটতি হ্রাসের এমন চিত্র মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আকার বাড়াতেও সাহায্য করবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের পণ্যের রফতানির আকার বৃদ্ধির দৃশ্য অনুভব করে যে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মার্কিন পণ্যের চাহিদা ক্রমে বাড়ছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় মার্কিন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ায় এতদিন আমদানি পণ্যের চাহিদা তুঙ্গে ছিল।

বাণিজ্য ঘাটতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ঘাটতি রয়েছে চীনের সঙ্গে। অক্টোবরে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি আগের তুলনায় ১৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৪০ কোটি ডলার। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ এক বছর আগের তুলনায় ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি ছিল। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মোট বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৭০ হাজার ৫২০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। কভিডকালীন বিভিন্ন বিধিনিষেধের কারণে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যপ্রবাহ মারাত্মক আকারে কমেছিল।

অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে জ্বালানি তেল। কভিড-উত্তর পরিবেশে বৈশ্বিক জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রূপ নেয়া এবং হারিকেন আইডার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যের তেল শোধনাগার বন্ধ থাকায় জ্বালানি তেল রফতানিতে উল্লম্ফন দেখে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া অটোমোবাইল খাতে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধার লক্ষ করা গেছে। এ চিত্রের মাধ্যমে বোঝা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে অটোমোবাইল শিল্পে চলমান চিপ সংকট কিছুটা কাটতে শুরু করেছে, যা মার্কিন অটোমোবাইল শিল্পের জন্য ইতিবাচক রূপ নিয়ে আসছে।

ক্যাপিটাল ইকোনমিস্টের জ্যেষ্ঠ মার্কিন অর্থনীতিবিদ অ্যান্ড্রু হান্টার জানান, বাণিজ্যিক কার্যক্রমে এ প্রবৃদ্ধির চিত্র বছরের শেষ প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে আনুমানিক ১ শতাংশীয় পয়েন্ট যুক্ত করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *