ভোমরা স্থলবন্দরে ৮২৬ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে গত আড়াই বছরে ৮২৬ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ঘাটতি পড়েছে। বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা সংকট, এলসি জটিলতা, ডলার সংকট, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে টালমাটাল পরিস্থিতিসহ নানা সমস্যার কারণে এ ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ১২১ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে জুলাই-জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয় ৭৬০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬০ কোটি ২২ লাখ টাকা।
অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ভোমরা বন্দর দিয়ে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৯৫৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৪১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। সে হিসেবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২১২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৫৩১ কোটি ০১ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ছয় মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৭৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৫৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ বন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ২ হাজার ৬০৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ হাজার ৭৮০ কোটি ৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮২৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে ভোমরা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজি দিলওয়ার নওশাদ রাজু বলেন, বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ঘাটতির অন্যতম কারণ নিম্নমুখী আমদানি। ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদামতো পণ্য আমদানি করতে পারছেন না। পূর্ণাঙ্গ বন্দর হওয়া সত্ত্বেও এখানে ব্যবসায়ীদের সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে দেয়া হয় না। ব্যবসায়ীরা যদি তাদের চাহিদামাফিক পণ্য আমদানি করতে পারলে রাজস্ব ঘাটতি হতো না। তাছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরের পর থেকে করোনা মহামারীর পাশাপাশি ডলার সংকটের প্রভাবে এলসি জটিলতাসহ নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতায় রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের ডেপুটি সহকারী কমিশনার নেয়ামুল হাসান জানিয়েছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের পর থেকে নানা সংকটে বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা দেখা দেয়। বাড়তে শুরু করে রাজস্ব ঘাটতি। তাছাড়া সম্প্রতি ব্যাংকে এলসি জটিলতা ও ডলার সংকটের কারণে পণ্য আমদানি ব্যাহত হচ্ছে।