ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব ঘাটতি ১০ কোটি টাকা
চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রথম পাঁচ মাস (জুলাই-নভেম্বর) শেষে ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকায়। অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে স্থলবন্দরটি থেকে মোট ৪০০ কোটি ১ লাখ টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
যদিও এ সময় এখান থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৩৯০ কোটি ১১ লাখ টাকা। ঘাটতির পরিমাণ তুলনামূলক কম হওয়ায় শিগগিরই তা পুষিয়ে নেয়া যাবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে থাকলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে স্থলবন্দরের রাজস্ব আহরণের পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত এখান থেকে রাজস্ব আহরণ হয়েছিল ২৯৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে প্রায় ৯২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঘাটতি রয়েছে ১০ কোটি টাকার কাছাকাছি, যা আগামী দুই-এক মাসের মধ্যে পূরণ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থলবন্দরে বর্তমানে আমদানি-রফতানির যে ধারা রয়েছে, তা বজায় থাকলে চলতি অর্থবছরের আহরণ লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করা যাবে।
শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এখান থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০০ কোটি ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৬৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, আগস্টে ৮৪ কোটি ৮৭ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৫৮ কোটি ৬১ লাখ, অক্টোবরে ৮০ কোটি ৬২ লাখ ও নভেম্বরে ১১১ কোটি ৫ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সূত্রটি আরো জানায়, এ লক্ষ্যের বিপরীতে গত পাঁচ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৯০ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ৭৬৩ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে প্রায় ৪৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, আগস্টে ৬০ কোটি ৪৮ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৮৮ কোটি ৪৪ লাখ, অক্টোবরে ৮৫ কোটি ২৬ লাখ ও নভেম্বরে প্রায় ১০৮ কোটি ২৮ লাখ টাকার রাজস্ব আহরণ হয়েছে।
এ বিষয়ে ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, যেকোনো বন্দরের রাজস্ব আহরণ নির্ভর করে মূলত সেখানকার পণ্য আমদানি-রফতানির পরিমাণের ওপর।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) এ স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে মন্দা দেখা গেছে। ফলে ওই দুই মাসে রাজস্ব আহরণেও বেশ ঘাটতি দেখা দেয়। তবে এর পর থেকে এখান দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে বেশ চাঙ্গাভাব দেখা দেয়ায় এ রাজস্ব ঘাটতিও এখন কমে আসছে।
ভোমরায় শুল্ক স্টেশনে দায়িত্বরত কাস্টমস বিভাগীয় সহকারী কমিশনার সাগর সেন বলেন, অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রায় ১০ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে, যা দুই-এক মাসের মধ্যে পূরণ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
লক্ষ্যের তুলনায় ঘাটতি থাকলেও এ সময় গত অর্থবছরের একই সময়সীমার তুলনায় রাজস্ব আহরণ অনেকাংশে বেড়েছে। পাশাপাশি বর্তমানে এখান দিয়ে যে গতিতে আমদানি-রফতানি হচ্ছে, তার ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে চলতি অর্থবছরে এখান থেকে রাজস্ব আহরণের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করা যাবে।