ভোক্তা অধিকারকে চিনির বাজার মনিটরিংয়ে নির্দেশ বাণিজ্যমন্ত্রীর
নির্ধারিত মূল্যে বাজারে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন ২০২৩) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও মেডিসিনাল প্ল্যান্টস অ্যান্ড হারবাল প্রোডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘Present Status and Future Prospect of Ayurvedic System of Medicine in Bangladesh’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ নির্দেশ দেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েই চলেছে। যার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য ট্যারিফ কমিশনকে বলা হয়েছে। তারা জানিয়েছে দেশে চিনির দামের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মূল্যের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। সেটা আমরা সমন্বয় করবো।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চিনির ওপর যে শুল্কহার নির্ধারণ করা আছে তা কমানো অথবা ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ করবো। এটি করা হলে চিনির দাম কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।
টিপু মুনশি জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমানোর সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারে দাম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং হ্রাসকৃত মূল্যে তেল বিক্রি করা হচ্ছে। সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে রাখার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু যেসব পণ্য আমদানি করতে হয় সেসব পণ্যের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে বিক্রি করতে হয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দেশে চিনি ও ভোজ্যতেলের চাহিদার বিপরীতে প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হয়। এ দুই পণ্যের দাম ওঠানামা করে। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়ে।
এর আগে সেমিনারে দেওয়া বক্তব্যে টিপু মুনশি বলেন, আয়ুর্বেদিক ওষুধ শিল্প একটি প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থা। যা মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে এর উন্নয়ন ও বিকাশে কাজ করা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশসমূহ আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিদেশে রপ্তানি করে থাকে। আমরাও আমাদের দেশে উৎপাদিত আয়ুর্বেদিক ওষুধ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারি। এজন্য সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এ লক্ষ্য পূরণে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সম্ভাবনাময় আয়ুর্বেদ ওষুধ শিল্প খাতকে কাজে লাগাতে হলে গবেষণার ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। এছাড়া এর উপরকারিতা সবার কাছে পৌঁছাতে হবে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে। আমরা অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়টিকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। আয়ুর্বেদিক ওষুধ অ্যান্টিবায়টিকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. হাকীম মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডের সদস্য আ. খ. মাহবুবুর রহমান সাকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান।