ভারি বর্ষণে পাকিস্তান-ইরানে তিন শতাধিক প্রাণহানি
কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অতিরিক্ত বর্ষণের জেরে বিধ্বস্ত পাকিস্তান ও ইরানের বিস্তীর্ণ অংশ। পাকিস্তানে বর্ষা শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত হওয়া নানা দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩২০ ছাড়িয়েছে। অন্য দিকে ইরানে এখন পর্যন্ত ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজের সংখ্যা কমপক্ষে ১৬।
গত কয়েক সপ্তাহের বৃষ্টিতে পাকিস্তানে সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বালুচিস্তান প্রদেশ। বন্যায় শুধু ওই প্রদেশেই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১২৭ জনের। মৃতদের মধ্যে ৪৬টি শিশু ও ৩২ জন নারী রয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ গত কাল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ফেডারেল ও প্রাদেশিক পর্যায়ে সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। মৃতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনপ্যাকেজ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন শরিফ।
পাক প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, শুধু বালুচিস্তানেই অন্তত ১৩ হাজার বাড়ি পুরোপুরি বা আংশিক ভেঙে গিয়েছে। সিন্ধু প্রদেশেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রচুর। করাচি শহরে বৃষ্টি সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ৭০ জন। পাঞ্জাব প্রদেশে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৫০ ও দুর্গম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ৬০ জন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে রেল পরিষেবাও গত কয়েক সপ্তাহে ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
প্রায় একই পরিস্থিতি ইরানেও। বছরের বেশির ভাগ সময়ে খরা দেখা যায় যেখানে, সেই সব এলাকা অতিবৃষ্টিতে এখন ভেসে গিয়েছে। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন পরিবেশবিদেরা।
সপ্তাহব্যাপী বৃষ্টিতে ইরানে এরই মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। বানে ভেসে গিয়েছে বহু বাড়ি। নিখোঁজের সংখ্যা অন্তত ১৬। বন্যা দুর্গতদের সব রকমের সাহায্য ও ত্রাণ দেওয়ার জন্য প্রাদেশিক গভর্নরদের নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান মেহদি ভালিপোর সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ৬৮৭টি উদ্ধারকারী দল দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযানে নেমেছেন। দলে রয়েছেন অন্তত ৩ হাজারকর্মী। বন্যায় ডুবে যাওয়া বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ১৩০০ মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।