ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য বাড়াতে একমত চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা

স্টাফ রিপোর্টার

ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য ও পারস্পরিক বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এ লক্ষ্যে উভয় দেশের শিল্প ও বাণিজ্যিক পক্ষগুলোর মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধি করা হবে।

গত সোমবার চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দেশটিতে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সঙ্গে বৈঠক করেন। পরদিন এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। নবম চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামে অংশ নিতে চীন সফর করছেন রামাফোসা।

বৈঠকে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং বাণিজ্য কাঠামো পর্যালোচনার জন্য শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন রামাফোসা। টেকসই উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাতে চীন থেকে আরো বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দেশটি দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তম অংশীদার। গত বছর চীন থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার আমদানির পরিমাণ রফতানির তুলনায় অনেক বেশি ছিল।

যৌথ বিবৃতিতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে আগ্রহের কথা জানায় চীন। এক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকায় চীনা কোম্পানিগুলোয় আরো বেশি নিয়োগ দেয়া হবেও জানানো হয়।

বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, চীন দক্ষিণ আফ্রিকায় সংশ্লিষ্ট কাঁচামালের উৎসের কাছাকাছি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি ও দক্ষতা দেশটির অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করবে। এছাড়া দারিদ্র্য বিমোচন ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হবে।

বৈঠকের পর উভয় দেশ একাধিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর মধ্যে স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম ব্যবহার, আবাসন ও পুনর্বাসন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চীনে দুগ্ধজাত পণ্য ও উল রফতানিসংক্রান্ত চুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় দেশ নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন, শস্য সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিতরণে সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করছে। এছাড়া দেশ দুটির চেম্বার অব কমার্স এবং অন্য সমিতিগুলোর মাধ্যমে আয়োজিত নতুন জ্বালানি বিনিয়োগ সম্মেলনের সহ-আয়োজক হবে। তবে এতে নতুন বিনিয়োগ বা অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়নি।

এর আগে গত আগস্টে জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের আগে দুই প্রেসিডেন্ট বৈঠক করেছিলেন। সে সময় দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উন্নীত করতে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল চীন। এছাড়া কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আয়ুষ্কাল বাড়ানো এবং সারা দেশে ট্রান্সফরমার ও সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সহায়তার কথাও জানিয়েছিল।

তখন রামাফোসা বলেছিলেন, নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ না করলেও চীন বিদ্যুৎ খাতে ৫০ কোটি র‍্যান্ডের (দক্ষিণ আফ্রিকার মূল্য) একটি অনুদান দিয়েছে।

সম্প্রতি বেইজিংয়ে আফ্রিকান কন্টিনেন্টাল ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (এফটিএ) বাস্তবায়নে আফ্রিকান দেশগুলোকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন দুই নেতা। এর মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম শুল্কমুক্ত বাণিজ্য এলাকা গঠন সম্ভব হবে, যা পণ্য ও সেবার একক মহাদেশীয় বাজার তৈরি এবং আফ্রিকার উন্নতি ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *