ভারতে আধিপত্য হারানোর শঙ্কায় ভিসা ও মাস্টারকার্ড
ভারতে বাজারে আধিপত্য হারানোর শঙ্কায় ভুগছে মার্কিন পেমেন্ট ব্যবস্থা ভিসা ও মাস্টারকার্ড। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভারতের নিজস্ব পেমেন্ট ব্যবস্থা রু’পের উত্থানে এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে। সম্প্রতি রু’পের উত্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে মার্কিন পেমেন্ট ব্যবস্থা ‘ভিসা’। বাজারে রু’পের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বিজ্ঞাপনগুলো ভিসার কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে প্রতিষ্ঠানটি অভিযোগ করে। ভোক্তাদের কাছে রু’পের উত্থান ভিসার আবেদনকে অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে। খবর রয়টার্স।
রু’পের উত্থানের পেছনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লবিস্ট গ্রুপের সমর্থন রয়েছে বলে জানা যায়। এতে স্থানীয় কার্ডের ব্যবহার ভারতের জাতীয় পরিষেবার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। ২০১২ সালে ভারতের ন্যাশনাল পেমেন্ট করপোরেশন (এনপিসিআই) এ সেবার যাত্রা করে।
ইউএস প্রশাসনের নথিতে দেখা যায়, ভারতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে ক্রমাগতই উদ্বেগ বাড়ছে ভিসার মধ্যে। গত ৯ আগস্ট মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) ও ভিসার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলফ্রেড কেলির মধ্যকার এক বৈঠকে এমন আলোচনা উঠে আসে। অন্যদিকে আরেক মার্কিন পেমেন্ট জায়ান্ট মাস্টারকার্ডও রু’পের এমন উত্থানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউএসটিআরের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে এ উদ্বেগের কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
এ ব্যাপারে ভিসা, ইউএসটিআর, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও এনপিসিআই কোনো পক্ষেরই মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কয়েক বছর ধরেই অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট ব্যবস্থা রু’পের পক্ষে অবস্থান করছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ ধরনের কার্যক্রম দেশটিতে ভিসা ও মাস্টারকার্ডের আধিপত্যমূলক ব্যবসায়িক অবস্থানকে ক্রমাগত উদ্বেগের মুখে ফেলছে। ভারতে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার বাজার দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। ২০২০ সালের নভেম্বরের হিসাব অনুযায়ী দেশটির ৬৩ শতাংশ ডেভিট ও ক্রেডিট কার্ডের পেমেন্ট ব্যবস্থা রু’পেতে সংযুক্ত হয়েছে। ২০১৭ সালের তুলনায় এটি ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। রু’পের সম্প্রতি প্রকাশিত এক তথ্যে এমনটা দেখা যায়।
২০১৮ সালে এক বক্তৃতায় নরেন্দ্র মোদি রু’পে ব্যবহারকে দেশপ্রেমের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রত্যেকের পক্ষে সীমান্তে পৌঁছে লড়াই করা সম্ভব নয়। আমরা রু’পে ব্যবহারের মাধ্যমে দেশকে সেবা দিতে পারি।
তবে ভারতের ডেভিট ও ক্রেডিট কার্ডগুলোর অধিকাংশ রু’পে অন্তর্ভুক্ত হলেও বেশির ভাগ পেমেন্টই সম্পন্ন করা হয় ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে। শুধু সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলো রু’পে অন্তর্ভুক্ত কার্ডগুলো ইস্যু করে।