ভারতের ৪০ শতাংশ সম্পদ এক শতাংশ ধনীর হাতে

স্টাফ রিপোর্টার

ভারতের মোট সম্পদের ৪০ শতাংশের বেশির মালিক এখন মাত্র এক শতাংশ ধনী ব্যক্তি। বিপরীতে, নিচের অর্ধেক জনসংখ্যার হাতে রয়েছে মাত্র তিন শতাংশ সম্পদ। সোমবার (১৬ জানুয়ারি, ২০২৩) ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভার প্রথম দিনে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে অধিকার গোষ্ঠী অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের শীর্ষ ১০ ধনীর ওপর পাঁচ শতাংশ হারে ট্যাক্স চাপালে দেশটির সব শিশুকে স্কুলে ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পুরোটা জোগাড় হয়ে যাবে।

শুধু বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানির ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যকার অনাদায়ী মুনাফার ওপর এককালীন কর বসালেই ১ দশমিক ৭৯ লাখ কোটি রুপি উঠতে পারে, যা ৫০ লাখের বেশি ভারতীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের এক বছরের বেতন দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

সারভাইভাল অব দ্য রিচেস্ট’ নামে ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারতীয় বিলিয়নিয়ারদের সব সম্পদের ওপর যদি এককালীন দুই শতাংশ হারে কর বসানো হয়, তাহলে ৪০ হাজার ৪২৩ কোটি ‍রুপি উঠবে। এই অর্থ দিয়ে দেশটিতে অপুষ্টিতে ভোগা লোকদের তিন বছরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

ভারতের শীর্ষ ১০ ধনকুবেরের ওপর এককালীন পাঁচ শতাংশ কর (১ দশমিক ৩৭ লাখ কোটি রুপি) থেকে পাওয়া অর্থ হবে দেশটির স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় (৮৬ হাজার ২০০ কোটি রুপি) এবং আয়ুশ মন্ত্রণালয়ের (৩ হাজার ৫০ কোটি রুপি) ২০২২-২৩ সালের জন্য বরাদ্দ সমন্বিত বাজেটের চেয়ে অন্তত দেড়গুণ বেশি।

লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে একজন পুরুষ শ্রমিকের প্রতি এক রুপি উপার্জনের বিপরীতে নারী শ্রমিক পান মাত্র ৬৩ পয়সা।

তফসিলি জাতি এবং গ্রামীণ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে পার্থক্যটি আরও বেশি। সুবিধাপ্রাপ্ত সামাজিক গোষ্ঠীগুলোর উপার্জনের তুলনায় তফসিলি জাতিগোষ্ঠীর লোকদের উপার্জন মাত্র ৫৫ শতাংশ এবং ২০১৮-২০১৯ সালের মধ্যে দেশটির শহরবাসীরা যা আয় করেছেন গ্রামীণ কর্মীরা পেয়েছেন তার অর্ধেক।

অক্সফাম জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে ভারতীয় বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ বেড়েছে অন্তত ১২১ শতাংশ। আরও স্পষ্ট করে বললে, ওই সময়ে দৈনিক ৩ হাজার ৬০৮ কোটি রুপি করে সম্পদ বেড়েছে তাদের।

২০২০ সালে দেশটিতে বিলিয়নিয়ার ছিলেন মোট ১০২ জন। ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৬ জনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *