ভারতের পণ্য রফতানি সংকুচিত
আগস্টে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে ভারত। অর্থের হিসাবে এ রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ১৫ শতাংশ কম। এ নিয়ে গত ২০ মাসে প্রথমবারের মতো সংকুচিত হয়েছে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির রফতানি। গত মাসে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ২ হাজার ৮৬৮ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। অপরিশোধিত জ্বালানি আমদানি বাড়ায় দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি প্রসারিত হয়েছে। খবর এএনআই।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, আগস্টে ৬ হাজার ১৬৮ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে ভারত। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৩৭ শতাংশ বেশি। এর আগে সর্বশেষ ২০২০ সালে নভেম্বরে দেশটির রফতানি সংকুচিত হয়েছিল। সে সময় রফতানি কমার হার ছিল ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গত মাসে সংকুচিত হলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (এপ্রিল-আগস্ট) ভারতের রফতানি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এ সময়ে দেশটির রফতানি ১৭ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে ১৯ হাজার ২৫৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। যদিও রফতানির তুলনায় আমদানি বাড়ার হার অনেক বেশি। গত পাঁচ মাসে আমদানি ব্যয় ৪৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়ে ৩১ হাজার ৭৮১ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। যখন বাণিজ্য ঘাটতি ১২ হাজার ৫২২ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। যদিও গত বছরের একই সময়ের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৩৭৮ কোটি ডলার।
গত মাসে জ্বালানি তেল আমদানি ৮৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ১৭৬ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে এ সময়ে দেশটির স্বর্ণ আমদানি ৪৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫১ কোটি ডলারে।
এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য সচিব বিভিআর সুব্রামানিয়াম বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের সামগ্রিক পণ্য রফতানি স্বাচ্ছন্দ্যেই ৪৫ হাজার কোটি ডলার অতিক্রম করবে। যদিও আমার অভ্যন্তরীণ লক্ষ্যমাত্রা ৪৭ হাজার কোটি ডলার। এ সময়ে পরিষেবা রফতানি ৩০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হবে। সুতরাং চলতি অর্থবছরে আমাদের মোট রফতানি আয় ৭৫ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে। যেখানে গত অর্থবছরে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৬৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।
রফতানি শ্লথ হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও নির্দিষ্ট পণ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে আমরা গম, ইস্পাত ও আকরিক লোহা রফতানিতে কিছু বিধিনিষেধ এবং কিছু পণ্যের ওপর রফতানি শুল্ক আরোপ করেছি। এ বিষয়গুলো সম্মিলিতভাবে রফতানিকে ধীর করে দিয়েছে।
পরিষেবা রফতানি নিয়ে তিনি বলেন, প্রতি মাসে প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলারের পরিষেবা রফতানি হচ্ছে। এখন পরিবহন ও ভ্রমণ খাত পুনরুদ্ধার হয়েছে। পণ্য ও পরিষেবা খাতের বাণিজ্য ভারসাম্য ১৬ থেকে ১৮ হাজার কোটি ডলারের মধ্যে হবে। এটা খারাপ নয়। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমি নিশ্চিত যে, সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বাণিজ্য ভারসাম্য যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় তা নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এছাড়া যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির কারণে আগামী বছরগুলোয় রফতানি বাড়বে।
এদিকে এপ্রিল-আগস্ট সময়ে ভারতের আমদানি ব্যয় ২৮ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ৩৯০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। গত বছরের এ সময়ে আমদানি ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪১০ কোটি ডলার।