ভারতের জিএসপি বাতিল করছে যুক্তরাষ্ট্র

ভারতকে দেওয়া অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা (জিএসপি) প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল সোমবার দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত ও তুরস্ককে দেওয়া বাণিজ্যসুবিধা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো শুল্ক ছাড়াই ভারতের ৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য প্রবেশ করতে পারে। ট্রাম্পের নির্দেশে এই সুবিধা এবার বাতিল হতে যাচ্ছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় থেকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর বিষয়ে প্রতিজ্ঞার কথা জানান ট্রাম্প। ২০১৭ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বারবারই এ বিষয়ে ভারতকে সতর্ক করছেন তিনি।

নিজের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে মার্কিন কংগ্রেসকে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, ‘ভারত এত দিন জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সের (জিএসপি) মধ্যে ছিল। এখন সেটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।’ ওই চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করে আমি বুঝতে পেরেছি যে ভারত তাদের দেশের বাজারে ব্যবসার ক্ষেত্রে এ ধরনের সুবিধা দেবে না।’ পদক্ষেপ নেওয়ার ভাবনা প্রকাশ করলেও ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে একই রকম সুযোগ-সুবিধা দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

কংগ্রেস সদস্যদের কাছে অপর আরেক চিঠিতে তুরস্কের জন্য জিএসপি–সুবিধা বাতিল করার কথা জানান ট্রাম্প।

মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিস জানিয়েছে, ভারতকে জিএসপি–সুবিধা বাতিলের বিষয়টি আগামী দুই মাসের মধ্যে কার্যকর হচ্ছে না। তারা জানায়, ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যঘাটতির পরিমাণ ২৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্বে জিএসপি–সুবিধা থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত দেশ হচ্ছে ভারত। আর সেই সুবিধা প্রত্যাহার করা অবশ্যই দিল্লির কাছে একটি বড় ধাক্কা। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ভারতের বিরুদ্ধে এর আগে এত বড় পদক্ষেপ নেননি ট্রাম্প।

সম্প্রতি ই-কমার্স বাণিজ্য নিয়ে নতুন নিয়ম জারি করেছে ভারত। নতুন নিয়ম অনুযায়ী আমাজন ইন করপোরেশন ও ওয়ালমার্ট ইন করপোরেশন ভারতের বাজারে অবাধ সুবিধা পাচ্ছে না। মূলত, নিজেদের প্রতিষ্ঠান ফ্লিপকার্ডকে সুবিধা দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। তবে এ সিদ্ধান্তে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক কিছুটা শিথিল হয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে পেয়েছিল দিল্লি। তবে সেই রেশ কাটতে না কাটতেই বাণিজ্যিক দিক থেকে ভারতকে দেওয়া বিশেষ সুবিধা প্রত্যাহার করে নিল হোয়াইট হাউস। এ অবস্থায় ভারত কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *