ভারতের কাছে বিশ্বকাপ বিক্রি

শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী মাহিন্দানদা আলুথগামাগের এক মন্তব্যে তোলপাড় ক্রিকেটাঙ্গনে। তার দাবি, ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালটি সম্পূর্ণ পাতানো ছিল।

‘নিউজ ফাস্ট’-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে লঙ্কান সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী কোনো রাখঢাক না রেখেই বলেন, ‘২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালটি পাতানো ছিল। আমি যা বলছি দৃঢ়তার সাথেই বলছি। তখন আমি ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলাম। আমি দায়িত্ব নিয়েই বলছি। তবে দেশের স্বার্থে আমি বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করতে চাই না। খেলাটা ছিল ভারতের বিপক্ষে ২০১১ সালের, যে ম্যাচটি আমরা জিততে পারতাম। কিন্তু ম্যাচটি ছিল পাতানো।’

তিনি যোগ করেন, ‘ভারতের কাছে বিশ্বকাপ বিক্রি করে দিয়েছিলাম আমরা। আমি দায়িত্ব নিয়েই এ কথা বলছি। এটা নিয়ে তর্ক করতে পারব। মানুষ তা জানে। আমি ক্রিকেটারদের এতে জড়াতে চাই না। তবে নির্দিষ্ট একটা গ্রুপ এই ম্যাচ ফিক্সিংয়ে অবশ্যই জড়িত ছিল।’

ফাইনালটি নিয়ে অবশ্য কথা ওঠেছিল আগেও। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে ওই ম্যাচে ৬ উইকেটে ২৭৪ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় শ্রীলঙ্কা। মাহেলা জয়াবর্ধনে ৮৮ বলে খেলেন ১০৩ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস।

জবাব দিতে নেমে দ্রুত বীরেন্দ্রর শেবাগ আর শচিন টেন্ডুলকারকে হারালেও গৌতম গম্ভীরের ৯৭ আর অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির হার না মানা ৯১ রানের ইনিংসে ৬ উইকেটের জয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলে ভারত।

সেই ম্যাচটিতে লঙ্কানদের বাজে বোলিং আর ফিল্ডিং ছিল চোখে আটকানোর মতো। ম্যাচে ধারাভাষ্যকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন শ্রীলঙ্কার ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা। তিনিও ম্যাচটি নিয়ে সন্দেহের আঙুল তুলেছিলেন বছর তিনেক আগে।

২০১৭ সালের জুলাইয়ে রানাতুঙ্গা বলেন, ‘যখন আমরা হেরে যাই, আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। মনের মধ্যে একটা সন্দেহ জাগে। শ্রীলঙ্কার আসলে কি হয়েছিল, অবশ্যই ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল নিয়ে তদন্ত করা উচিত।’

রানাতুঙ্গা অবশ্য পরিষ্কার করে ফিক্সিং দাবি করেননি ম্যাচটিকে। তবে এতদিন পর সাবেক লঙ্কান ক্রীড়ামন্ত্রীর অভিযোগটা আমলে নেয়ার মতোই। সে ম্যাচে সেঞ্চুরি করে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেয়া মাহেলা জয়াবর্ধনে এবার খেপেছেন গুরুতর অভিযোগ শুনে।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘নির্বাচন কি কাছে চলে এসেছে? মনে হচ্ছে সার্কাস শুরু হয়ে গেছে। নাম এবং প্রমাণ হাজির করুন।’

সেই ফাইনালে শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়ক ছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা। যেহেতু তার কাঁধে ছিল গুরুদায়িত্ব, স্বভাবতই মুখ খুলেছেন তিনিও। জয়াবর্ধনের টুইটের জবাবে সাঙ্গা লিখেন, ‘আইসিসি এবং এন্টি করাপশন ও সিকিউরিটি ইউনিটের কাছে তাকে (সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী) প্রমাণ হাজির করতে হবে, যাতে করে এই অভিযোগ সম্পূর্ণরুপে তদন্ত করা যায়।’

যা শুরু হলো, এত সহজে এই বিতর্ক হয়তো থামবে না। দেখা যাক, কোথাকার জল কোথায় গড়ায়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *