ব্যাংক, বীমা ও এনবিএফআই উদ্যোক্তার শেয়ার লেনদেনে ছাড়

স্টাফ রিপোর্টার

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর বিষয়ে সম্প্রতি নতুন নির্দেশনা জারি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ নির্দেশনা অনুসারে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা বা পরিচালকেরা বিএসইসির পূর্বানুমোদন ছাড়া শেয়ার কেনাবেচা কিংবা স্থানান্তর করতে পারবেন না। তবে ব্যাংক, বীমা কোম্পানি ও অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) উদ্যোক্তা বা পরিচালকেরা এক্ষেত্রে ছাড় পাবেন। আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হবে বলে বিএসইসির আদেশে জানানো হয়েছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সেটলমেন্ট অব ট্রানজেকশন্স বিধিমালা অনুসারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে তৎক্ষণাৎ ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করতে পারবে। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএসইসির জারি করা আদেশের কারণে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ যেসব কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করতে পারেনি, সেগুলোকেও এখন স্থানান্তর করা যাবে।

‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা কিংবা পরিচালকের শেয়ার লেনদেনের বিষয়ে বিএসইসির নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংক, বীমা ও এনবিএফআই বাদে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা বা পরিচালকেরা বিএসইসির পূর্বানুমোদন ছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কিংবা স্টক এক্সচেঞ্জের বাইরে কোনো মাধ্যমেই তাদের শেয়ার কেনাবেচা কিংবা স্থানান্তর করতে পারবেন না।

শেয়ার ক্লিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সেটলমেন্ট অব ট্রানজেকশন্স বিধিমালার ৫(২) বিধির ওপর বিএসইসির এ নির্দেশনা প্রাধান্য পাবে। এক্ষেত্রে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা কোম্পানির শেয়ার ক্লিয়ারিং হবে যেদিন লেনদেন হবে তার তিনদিন পরে (টি+৩)। দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সেটলমেন্ট অব ট্রানজেকশন্স বিধিমালায় ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা কোম্পানির শেয়ার ক্লিয়ারিংয়ের সময় নির্ধারিত ছিল টি+৯।

বিএসইসির নতুন এ নির্দেশনার মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত ২০০৮ সালের ১৫ জানুয়ারি জারি করা দুটি নির্দেশনা ও ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর জারি করা একটি নির্দেশনার কার্যকারিতা রদ করা হয়েছে। ‘জেড’ ক্যাটাগরি-সংক্রান্ত বিএসইসির ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর জারি করা আদেশে বলা হয়েছিল, পরপর দুই বছর নগদ লভ্যাংশ প্রদান কিংবা বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ হলে কমিশনের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ‘জেড’ গ্রুপে স্থানান্তর করা যাবে। তাছাড়া ছয় মাস বা তার বেশি সময় কোম্পানির উৎপাদন বা কার্যক্রম বন্ধ থাকলে, পরপর দুই বছর নিট পরিচালন লোকসান অথবা পরিচালন কার্যক্রম থেকে নগদ প্রবাহ ঋণাত্মক থাকলে অথবা কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসান তার পরিশোধিত মূলধনের বেশি হলে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হবে। অবশ্য আইনি কারণে এজিএম করতে না পারলে কিংবা সংস্কার, বিএমআরই ও দৈব দুর্ঘটনাজনিত কারণে ছয় মাসের বেশি উৎপাদন বন্ধ থাকলে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হবে না। এছাড়া সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের কারণে কমিশনের অনুমতিক্রমে স্টক এক্সচেঞ্জ কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করতে পারবে। স্টক এক্সচেঞ্জ এসব বিধান পরিপালন করা হচ্ছে কিনা সেটি নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করবে এবং বিএসইসির পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে কোনো কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর বা সমন্বয় করতে পারবে। ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা কোম্পানির শেয়ার ক্লিয়ারিং হবে যেদিন লেনদেন হবে তার তিনদিন পরে (টি+৩)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *