ব্যাংকের আইন বিভাগ শক্তিশালী করতে হবে খেলাপি কমাতে: বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা

স্টাফ রিপোর্টার

খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকের আইন বিভাগ শক্তিশালী করার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দ্রুত অর্থঋণ আদালতের বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তির পাশাপাশি উচ্চ আদালতে রিট নিষ্পত্তির জন্য অভিজ্ঞ প্যানেল আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে। এ জন্য কোন ধরনের নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে, তা বলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল রোববার এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার সব ব্যাংকে পাঠানো হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংকের ঋণ আদায় সুসংহত করতে আইন বিভাগের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংক খাতে বিদ্যমান খেলাপি ঋণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ অর্থঋণ আদালতে মামলাধীন। এর পরও অনেক খেলাপি ঋণের বিপরীতে ঋণগ্রহীতা উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। এসব মামলার বিপরীতে যথাযথ আইনি পদক্ষেপের জন্য ব্যাংকের আইন বিভাগকে অধিকতর শক্তিশালী করা হলে তা অর্থঋণ আদালত ও মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ বা আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এতে সুষ্ঠু ঋণ ব্যবস্থাপনা ও ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমে আর্থিক সক্ষমতা বাড়বে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকের এমডির সরাসরি তত্ত্বাবধানে একজন চিফ লিগ্যাল অফিসার পদায়ন করতে হবে। যিনি কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী হবেন। আর ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আইন বিভাগ অন্তত ৫ বছর কাজের অভিজ্ঞতাসহ মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বিশেষায়িত উচ্চতর ডিগ্রিধারীকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্যানেল আইনজীবী নিয়োগের ক্ষেত্রেও এসব শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি অগ্রাধিকার দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগে মামলা পরিচালনাকারীদের। একটি ব্যাংকের মামলা ও অনাদায়ী ঋণের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল বহাল করতে হবে। এদের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ কর্মকর্তা হতে হবে আইন বিষয়ে ডিগ্রিধারী এবং ব্যাংকিং বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। ঢাকা ও চট্টগ্রামে মামলাধীন ঋণের সংখ্যা ও পরিমাণের আধিক্য বিবেচনায় অঞ্চল দুটির জন্য একজন সার্বক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বহাল করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, একজন আইনজীবীকে সর্বোচ্চ দুই বছর মেয়াদে প্যানেলভুক্ত করা যাবে। কেউ ব্যাংকের স্বার্থ পরিপন্থি কারণে প্যানেল থেকে বাদ পড়লেও তিন বছর পর আবার তাঁকে প্যানেলভুক্ত করা যাবে। ব্যাংকের প্যানেলভুক্ত আইনজীবীর পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করতে হবে বার্ষিক ভিত্তিতে। এ ক্ষেত্রে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা ও হার, নির্ধারিত সময়ে যথাযথ ও মানসম্মত আইনি মতামত প্রদান, আদালতে উপস্থিতির হার ও প্রত্যক্ষভাবে মামলা পরিচালনা, মামলাসংশ্লিষ্ট অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাসহ অন্যান্য পেশাগত যোগ্যতা বিবেচনা করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *