ব্যাংকিং এজেন্ট বাড়ালে রেমিটেন্স বাড়বে

মধ্যপ্রাচ্যের বাইরের দেশগুলোতে ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা কম। ফলে দেশগুলো থেকে রেমিটেন্স প্রবাহ খুব একটা বেশি নয়। দেশগুলো থেকে রেমিটেন্স বাড়াতে ব্যাংকিং সুবিধা বৃদ্ধি করাটা খুব জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তাছাড়া ধনী দেশগুলো থেকে প্রবাসীরা দেশে টাকা পাঠানোর চেয়ে খরচ করতেই ভালোবাসেন বলেও জানান তিনি।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রথম দুই মাসে রেমিটেন্স প্রবাহের দিক থেকে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত,  যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত,  মালয়েশিয়া, ওমান, যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।

এবিষয়ে সাবেক গভর্ণর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, চীন, জাপান, কোরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বাইরের প্রবাসীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য প্রচারণা বৃদ্ধি করা দরকার।

বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ব্যাংকিং এজেন্ট বেশি। সে কারণে দেশগুলো থেকে খুব সহজে দেশে টাকা পাঠাতে পারেন প্রবাসীরা। ব্যাংকিং সুবিধা খুব বেশি ভাল না হওয়ার কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো থেকে রেমিটেন্স প্রবাহ কম বলে মনে করেন সাবেক এই গভর্ণর।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) ১৩১ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং দ্বিতীয় মাসে (আগস্ট) ১৪১ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

এবিষয়ে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি’র (বায়রা) সভাপতি বেনজির আহমেদ বলেন, মধ্যপ্রাচ্য থেকে বেশি রেমিটেন্স আসার মূল কারণ হচ্ছে প্রবাসী শ্রমশক্তির অধিকাংশই সেখানে বসবাস করে। প্রায় ৮০ শতাংশ প্রবসী মধ্যপ্রাচ্যে বাস করে। যে দেশে প্রবাসীদের সংখ্যা বেশি থাকবে সেদেশ থেকে রেমিটেন্স বেশি আসাটাই স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি জানান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যখন কোনো দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয় তখন বায়রা’কে সঙ্গে নেওয়া হয়না। বাইরার প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিলে খুব সহজেই নতুন শ্রমবাজার তৈরি হওয়া সম্ভব। প্রায় ৯৫ শতাংশ বৈঠকেই আমাদের উপেক্ষা করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে মন্ত্রণালয় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে পারেনা। তবে আমাদের সঙ্গে নিলে আমরা সেই যোগাযোগ বজায় রাখি।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন সরকার এসে শ্রমশক্তি আমদানির নিয়ম-কানন কিছুটা পরিবর্তন করতেই পারে। তাতে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের উপর কোনো প্রাভাব পড়বে না।

উল্লেখ, গত ১০ বছরে আগের ১০ বছরের তুলনায় প্রবাসী আয় বেড়েছে প্রায় চার গুণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ হাজার ১৮৫ কোটি ৬২ লাখ ডলার। এর আগের ১০ অর্থবছরে (১৯৯৮-৯৯ থেকে ২০০৭-০৮ অর্থবছর পর্যন্ত) রেমিট্যান্স এসেছিল ৩ হাজার ৩৬৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার। সেই হিসাবে গত ১০ বছরে এর আগের ১০ বছরের চেয়ে দেশে ৯ হাজার ৮১৯ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স বেশি এসেছে, যা তুলনামূলকভাবে আগের ১০ বছরের তুলনায় ৩.৯১ গুণ বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *