বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি

চলতি বছরের জানুয়ারির মতো ফেব্রুয়ারিতেও বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে। গত মাসে বিশ্বব্যাপী ইস্পাত উৎপাদনের সম্মিলিত পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশের বেশি বেড়ে পৌনে ১৪ কোটি টনে পৌঁছেছে।

ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের (ডব্লিউএসএ) সর্বশেষ মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ সময় চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশির ভাগ দেশে ইস্পাত উৎপাদন বাড়লেও জাপান, ব্রাজিল, ফ্রান্স ও ইতালিতে কমেছে। খবর রয়টার্স ও মেটাল বুলেটিন।

ডব্লিউএসএর প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংগঠনভুক্ত ৬৪ দেশে সব মিলিয়ে ১৩ কোটি ৭৩ লাখ টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বব্যাপী সব মিলিয়ে ১৩ কোটি ১৯ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছিল। সে হিসাবে, এক বছরের ব্যবধানে বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদন বেড়েছে ৫৪ লাখ টন।

তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বজায় থাকলেও গত জানুয়ারির বিপরীতে ফেব্রুয়ারিতে বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদন ৯৪ লাখ টন কমেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ শতাংশ বেড়ে ১৪ কোটি ৬৭ লাখ টনে উন্নীত হয়েছিল।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ চীনে পণ্যটির সম্মিলিত উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ টনে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। গত জানুয়ারিতে দেশটিতে ৭ কোটি ৫০ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছিল।

ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে মোট ৮৭ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। গত জানুয়ারিতে দেশটির কারখানাগুলোয় ৮১ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছিল।

একই চিত্র দেখা গেছে বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায়। ডব্লিউএসএর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৫৫ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে।

উল্টো চিত্র বজায় রয়েছে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশ জাপানের ইস্পাত শিল্পে। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে সব মিলিয়ে ৭৭ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৬ শতাংশ কম। চলতি বছরের জানুয়ারিতেও দেশটির কারখানাগুলোয় ইস্পাত উৎপাদন ৯ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ৮১ লাখ টনের নিচে নেমে এসেছিল।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাতের সম্মিলিত উৎপাদন আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৬৯ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। এ সময় ব্রাজিলে সব মিলিয়ে ২৭ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ কম।

অন্যদিকে তুরস্কের কারখানাগুলোয় এক বছরের ব্যবধানে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ কমে সাকল্যে ২৬ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে। গত মাসে পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনে পণ্যটির উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ টনে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি।

এদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউরোপের দেশগুলোয় ইস্পাত উৎপাদনে মিশ্রভাব বজায় ছিল বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ডব্লিউএসএ। এ সময় ইতালিতে সব মিলিয়ে ২০ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ কম।

একইভাবে ফ্রান্সে এ সময় পণ্যটির উৎপাদন দশমিক ৩ শতাংশ কমে ১২ লাখ টনে নেমে এসেছে। অন্যদিকে গত ফেব্রুয়ারিতে স্পেনের কারখানাগুলোয় সব মিলিয়ে ১১ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *