বেনজেমার জাদুতে মেসিদের বিদায়

স্টাফ রিপোর্টার

প্রথম লেগেই প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর ছিল এক গোলের জয়, দ্বিতীয় লেগের প্রথমার্ধেই তারা করে ফেলে আরও এক গোল। লিওনেল মেসি, নেইমার, এমবাপেদের বিপক্ষে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটে ওঠার লড়াইয়ে ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছিল স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ।

কিন্তু শেষ হওয়ার আগেই শেষ মানতে রাজি ছিল না ক্লাবটি। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে করিম বেনজেমার ১৮ মিনিটের এক হ্যাটট্রিকে পিএসজিকে বিদায় করে দিয়েছে রিয়াল। ম্যাচটি ৩-১ গোলে জেতার মাধ্যমে দুই লেগ মিলে ৩-২ গোলের অগ্রগামিতায় শেষ আটের টিকিট পেয়েছে তারা।

বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর লড়াইয়ে পিএসজিকে তেমন সুযোগই দেয়নি রিয়াল। প্রথমার্ধে তাও সমানে সমান দাপট দেখাতে পেরেছে পিএসজি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে একক আধিপত্য চলেছে রিয়ালের। পাশাপাশি নিজেদের ভুলেও গোল হজম করেছে ফ্রেঞ্চ ক্লাবটি।

ম্যাচের প্রথমার্ধে সমান ৮টি করে শট নিয়েছে দুই দলই। তবে গোলের দেখা পেয়েছে শুধু পিএসজি। ম্যাচের ৩৯ মিনিটের সময় নেইমারের বাড়ানো থ্রু বল ধরে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে দলকে এগিয়ে দেন তরুণ ফরাসি স্ট্রাইকার কাইলিয়ান এমবাপে।

এর আগে ম্যাচের ৩১ মিনিটের সময় দারুণ সুযোগ পেয়েও অল্পের জন্য লক্ষ্যচ্যুত হয় মেসির শট। মিনিট দুয়েক পর বল জালে জড়ান এমবাপে। কিন্তু আক্রমণ গড়ে ওঠার সময় সতীর্থ খেলোয়াড় নুনো মেন্দেস অফসাইডে থাকায় বাতিল হয় সেই গোল।

যে কারণে ম্যাচে ১-০ ও দুই লেগ মিলে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ৫৪ মিনিটের সময় আবারও জালের ঠিকানা খুঁজে নেন এমবাপে। কিন্তু এবার তিনি নিজেই ছিলেন অফসাইডে। ফলে গোল বাতিল হয় আরও একবার।

এর পরই আসে বেনজেমার সেই জাদুকরী ১৮ মিনিট। ম্যাচের ৬০ থেকে ৭৮ মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক পূরণ করে দলকে জেতানোর পাশাপাশি শেষ আটের টিকিট এনে দেন এ ফরাসি তারকা। অবশ্য এতে বড় অবদান ছিল পিএসজির দুর্বল রক্ষণেরও।

ম্যাচের ৬০ মিনিটে মার্কো ভেরাত্তির দূর থেকে দেওয়া ব্যাক পাসে ভড়কে যান পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডনারুম্মা। দৌড়ে এসে তাকে চ্যালেঞ্জ জানান বেনজেমা। বল ক্লিয়ারের চেষ্টায় ডি-বক্সের আরেক পাশে পাস দেন ডনারুম্মা। সেখানে প্রস্তুত ছিলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র।

ফাঁকায় বলটি পেয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বেনজেমাকে পাস দেন ব্রাজিলিয়ান তরুণ। ডি-বক্সের মাঝামাঝি জায়গা থেকে সহজেই সেটি গোলে পরিণত করেন বেনজেমা। পরে ম্যাচের ৭৬ মিনিটে লুকা মদ্রিচের দুর্দান্ত পাসে ঘুরে দাঁড়িয়েই অসাধারণ শটে দুই লেগ মিলে স্কোরলাইন ২-২ করেন তিনি।

দুই মিনিটের মধ্যেই রিয়ালকে এগিয়ে দেন বেনজেমা। এবার তার পায়ে বল তুলে দেন পিএসজির ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্কুইনহোস। সহজ সুযোগ পেয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন বেনজেমা। যার সুবাদে রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে তার গোল বেড়ে হয় ৬৭টি।

বেনজেমার এমন জাদুকরী হ্যাটট্রিকের পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পিএসজি। শেষ দিকে একটি ফ্রি কি পায় তারা। তবে মেসির নেওয়া সেই শট অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ফলে ২-৩ গোলে পিছিয়ে থেকেই বিদায় নিতে হয় পিএসজিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *