বিশ্বের সবচেয়ে দামি লাইসেন্স প্লেট ১৫৮ কোটি টাকায় বিক্রি হলো

স্টাফ রিপোর্টার

আমাদের দেশে একটি গাড়ির লাইসেন্স করাতে কত টাকা লাগে- হাজার দশেক থেকে শুরু করে এক লাখ। অথচ দুবাইয়ে একটি বিরল লাইসেন্স প্লেট বিক্রি হয়েছে দেড়শ কোটি টাকারও বেশি দামে। এর মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে দামি লাইসেন্স প্লেটের রেকর্ড গড়েছে সেটি।

শনিবার (৮ এপ্রিল ২০২৩) ‘পি ৭’ লাইসেন্স প্লেটটি নিলামে তুলেছিল এমিরেটস অকশন এলএলসি। শেষপর্যন্ত এটি সাড়ে পাঁচ কোটি দিরহামের বিনিময়ে কিনে নেন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকারও বেশি।

নিলামে পাওয়া এই অর্থ দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদের বৈশ্বিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি ‘ওয়ান বিলিয়ন মিলস এনডোমেন্ট’-এ দান করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

নিলাম কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, বিরল ‘পি ৭’ লাইসেন্স প্লেট হঠাৎ দেখলে মনে হবে, সেখানে কেবল সাত সংখ্যাটিই লেখা। কারণ পি বর্ণটি কিছুটা দূরে লেখা থাকবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে দাতব্য কাজে বিশেষ নম্বর প্লেটগুলো নিলামে তোলা অনেকটা রীতিতে পরিণত হয়েছে। এর মাধ্যমে অতিধনী ব্যক্তিরা বিপুল টাকা খরচ করে তাদের আত্মমর্যাদাবোধ, সম্পদের বিশালত্ব ও সৌখিন মানসিকতার প্রকাশ ঘটান।

শনিবারের নিলাম প্রায় ১৫ বছর আগে স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইদ আব্দুল গাফফার খৌরির গড়া একটি রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। সাইদ ২০০৮ সালে আবুধাবিতে ‘১’ নম্বরধারী লাইসেন্স প্লেটের জন্য ৫ কোটি ২২ লাখ দিরহাম (১৫০ কোটি টাকা প্রায়) খরচ করেছিলেন।

শুধু আমিরাতে নয়, এর বাইরেও বিরল লাইসেন্স প্লেটগুলো বিপুল টাকায় বিক্রি হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। যেমন চলতি বছরই হংকংয়ে ‘আর’ লেখা একটি নম্বর প্লেট নিলামে ৩২ লাখ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছিল।

দুবাইয়ের ব্যবসায়ী বলবিন্দর সিং সাহনি (আবু সাবাহ নামে পরিচিত) ২০১৬ সালে ৩ কোটি ৩০ লাখ দিরহাম দিয়ে ‘ডি ৫’ নম্বর প্লেট কিনেছিলেন। সোমবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুবাই সোনার শহর। এটি বড়লোকের শহর, নিরাপদ মানুষ, সুন্দর মানুষের শহর। তাই সবাই তাদের স্ট্যাটাস দেখাতে চায়।

সাহনি জানান, তিনি ২০০৬ সালে প্রথমবার বিলাসবহুল হোটেল বুর্জ আল আরবে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার গাড়ির লাইসেন্স প্লেটে অনেক বেশি নম্বর থাকায় তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সাহনিকে বলা হয়েছিল, তার কাছে একটি দুই-সংখ্যার নম্বর প্লেট অথবা রিজার্ভেশন থাকতে হবে।

তিনি বলেন, একটি এক সংখ্যার লাইসেন্স প্লেট থাকা আমার স্বপ্ন ছিল। যখন সুযোগ এলো এবং তারা আমাকে বললো, এই অর্থ দাতব্য কাজে যাবে, আমি রাজি হয়ে গেলাম।

সাহনি জানান, নয় সংখ্যাটি তার প্রিয় হওয়ায় ডি ৫ নম্বর প্লেটটি তার জন্য উপযুক্ত ছিল। কারণ পাঁচের সঙ্গে ডি (বর্ণমালার চতুর্থ অক্ষর) যোগ করলেলে যোগফল হবে নয়।

সর্বোচ্চ দামের লাইসেন্স প্লেটের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ও এমিরেটস নিলাম কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *