বিশ্বের প্রথম অগ্নি নির্বাপক প্রযুক্তির টিভি উদ্ভাবন ওয়ালটনের

স্টাফ রিপোর্টার

ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে টেলিভিশনে প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও অত্যাধুনিক ফিচারের সংযোজন করে চলেছে বাংলাদেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটন। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ালটন রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (আরঅ্যান্ডআই) বিভাগের প্রকৌশলীরা টেলিভিশন প্রযুক্তিতে সংযোজন করেছেন ইন্টিগ্রেটেড ফায়ার এক্সটিংগুইশার বা অগ্নি নির্বাপক সিস্টেম। বিশ্বে ওয়ালটনই প্রথম অগ্নি নির্বাপক প্রযুক্তিযুক্ত টেলিভিশন উদ্ভাবন করলো।

বুধবার (১২ অক্টোবর, ২০২২) রাজধানীতে ওয়ালটন কর্পোরেট অফিসে ফায়ার এক্সটিংগুইশার ইন্টিগ্রেটেড টেলিভিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে বিশ্বের প্রথম অগ্নি নির্বাপক ফিচারের টিভি উন্মোচন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি.’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ।

সেসময় জার্মান রাষ্ট্রদূত ওয়ালটনকে বিশ্বের প্রথম ফায়ার এক্সটিংগুইশার ইন্টিগ্রেটেড সেইফ টিভি উৎপাদনকারীর  সার্টিফিকেট প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জেওবি গ্রুপের সিনিয়র বিজনেস ডেভলপমেন্ট ম্যানেজার মার্কাস ফাইবিগ, এআই বিজনেস সলিউশনস মালয়েশিয়ার পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবুল বাশার হাওলাদার, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, ইভা রিজওয়ানা নিলু ও মো. হুমায়ূন কবীর, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান, ওয়ালটন টিভির চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে আমরা কাজ করছি। আমাদের ভিশন ২০৩০ সালের মধ্যে ওয়ালটনকে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল ব্র্যান্ডে পরিণত করা। ই-বাল্ব ডিভাইস ইন্টিগ্রেটেড ফায়ার সেফটিযুক্ত ওয়ালটন টিভি আমাদের পণ্যের নিরাপত্তা এবং ব্র্যান্ড ভ্যালুকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। আমাদের পণ্য ও গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ওয়ালটন টেলিভিশন বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ইলেকট্রনিক ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পাবে। এমন সব যুগান্তকারী উদ্ভাবন আমাদের ভিশন ২০৩০ অর্জনে পথে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

ওয়ালটন উদ্ভাবিত বিশ্বের প্রথম অগ্নি নির্বাপক প্রযুক্তিযুক্ত টিভি উন্মোচন অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদসহ অন্য অতিথিরা।

অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশকে জার্মানির স্বীকৃতি দানের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের সময়ে আমরা ওয়ালটন উদ্ভাবিত বিশ্বের প্রথম ফায়ার এক্সটিংগুইশার ইন্টিগ্রেটেড টিভি উন্মোচন করলাম। বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক উন্নতির অন্যতম লাইটহাউজ ওয়ালটন। রেফ্রিজারেটর, টিভির মতো হাই-টেক পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে ওয়ালটন বাংলাদেশের চিত্র পাল্টে দেওয়ার পাশাপাশি বহির্বিশ্বে পজিটিভ ব্র্যান্ডিং করছে। জার্মান প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন এবং টেলিভিশন রপ্তানির মাধ্যমে ওয়ালটন জার্মানি ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ককে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’

ওয়ালটন টিভির সিবিও প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন জানান, ভোল্টেজ ফ্ল্যাকচুয়েশন বা ওভারলোড, মরিচা পড়া, ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট ইত্যাদি কারণে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে আগুন ধরতে পারে। এই ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনা থেকে গ্রাহকদের রক্ষা করতে বিশ্বে প্রথম টেলিভিশনের মাদারবোর্ডে ই-বাল্ব মিনি ফায়ার এক্সটিংগুইশার সংযোজন করেছে ওয়ালটন।

তিনি আরও জানান, ই-বাল্ব হলো একটি অগ্নি নির্বাপক ফিউজ এবং এতে অ-বিষাক্ত নির্বাপক এজেন্টে ভরা একটি প্রলেপযুক্ত কাচের অ্যাম্পুল থাকে। এটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে আগুন ধরলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা শনাক্ত করে নিভিয়ে দেয় এবং পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ করে দেয়। ওয়ালটন টিভির মাদারবোর্ডে ই-বাল্ব মিনি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ব্যবহার করায় ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটবে না। ই-বাল্ব প্রযুক্তি ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের সেফটি ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।

উল্লেখ্য, দেশের শীর্ষ ফ্রিজ, টিভি, ওয়াশিং মেশিনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এখন ওয়ালটন। ৩৫টিরও বেশি দেশে, শতাধিক বিজনেস পার্টনারের মাধ্যমে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেবেলযুক্ত টিভি রপ্তানি করছে ওয়ালটন। ওয়ালটন টিভির মোট রপ্তানির প্রায় ৯৫ শতাংশই যাচ্ছে ইউরোপের উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *