বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত
বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এখন ভারত। যুক্তরাজ্যকে হটিয়ে এ অবস্থান দখল করেছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। এতে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির তালিকায় ষষ্ঠতে নেমে গিয়েছে ব্রিটেন। এ খবরকে লন্ডনের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ জীবনযাত্রার উচ্চব্যয় মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে দেশটি। সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ ২০২১ সালের শেষ তিন মাসে যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। ডলারের ওপর ভিত্তি করে এ হিসাব করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) জিডিপি পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারতের অর্থনীতি আরো প্রসারিত হয়েছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, এক দশক আগেও শীর্ষ অর্থনীতির তালিকায় ভারতের অবস্থান ছিল ১১তম। যদিও সে সময় ব্রিটেন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি ছিল। কভিডজনিত বিপর্যয় কাটিয়ে ভারতীয় অর্থনীতির শক্তিশালী পুনরুদ্ধার হলেও এক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে যুক্তরাজ্য।
ব্রিটেন আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উত্তরসূরিকে বেছে নেবে। এ দৌড়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে যিনি জিতবেন তাকে বিশাল এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে দেশটি।
আগামী মাসেই দেশটিতে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছনোর আশঙ্কা রয়েছে। জুনে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবেলায় সুদের হার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সব মিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, এ বছরের শেষ নাগাদ মন্দায় পড়বে যুক্তরাজ্য। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের পূর্বাভাস বলছে, চলতি বছরের শেষ প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) থেকে শুরু করে আগামী বছরের শেষ প্রান্তিক পর্যন্ত প্রতি প্রান্তিকে জিডিপি নিম্নমুখী থাকতে পারে।
বিপরীতে চলতি বছর ভারতীয় অর্থনীতি ৭ শতাংশেরও বেশি প্রসারিত হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি দেশটি এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের জিডিপি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। সরকারি এ পরিসংখ্যান অনুসারে, এ সময়ে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ। বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ভারত।
সমন্বয়ের ভিত্তিতে ডলারের বিনিময় হার ব্যবহার করে গণনা অনুসারে, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের শেষ দিনে ভারতীয় অর্থনীতির আকার ছিল ৮৫ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার। অন্যদিকে ব্রিটিশ অর্থনীতি ছিল ৮১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। এর পরও ভারতীয় অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান রয়েছে। যেখানে ব্রিটিশ অর্থনীতিতে পতনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্রিটিশ অর্থনীতি মাত্র ১ শতাংশ প্রসারিত হয়েছে। যদিও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করার পর দেশটির অর্থনীতি দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। এ সময়ে ডলারের বিপরীতে দুই দেশের মুদ্রার বিনিময় হারে পতন হলেও পাউন্ডের কমার হার বেশি ছিল। যেমন চলতি বছরই ভারতীয় মুদ্রার বিপরীতে পাউন্ডের বিনিময় হার ৮ শতাংশ কমেছে।
আইএমএফের নিজস্ব পূর্বাভাসেও বলা হয়েছে ভারত চলতি বছর ডলারের হিসাবে যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে যাবে। দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতি শুধু যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও জার্মানির পেছনে রয়েছে।