বিমার বড় দাপট, শীর্ষে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স
গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় দাপট দেখিয়েছে বিমা খাত। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ারের দাম বাড়ার দিক থেকে শীর্ষ ১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮টি বিমা খাতের কোম্পানি। এর শীর্ষ তিনটি স্থানই ছিল বিমার দখলে।
বিমার দাপটে গত সপ্তাহে লেনদেনের গতিও বেড়েছে। ডিএসইতে দৈনিক গড়ে ৬৫৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। কিছুদিন আগেই এ বাজারটিতে দৈনিক গড় লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে গিয়েছিল। দৈনিক গড় লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বাজার মূলধন বেড়েছে।
গত সপ্তাহজুড়ে বেশিরভাগ বিমা কোম্পানি শেয়ার দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখালেও সব থেকে বেশি দাপট দেখায় ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স। পুঁজিবাজারের এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চাহিদার শীর্ষে উঠে আসে। এতে সপ্তাহজুড়েই শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে, ডিএসই দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে এ সাধারণ বিমা কোম্পানিটির শেয়ার।
গেল সপ্তাহের চার কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৪ টাকা ৩০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে ৬১ কোটি ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৬৩ টাকা ২০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ৪৮ টাকা ৯০ পয়সা।
শেয়ার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার পাশাপাশি কোম্পানিাটির শেয়ার প্রতিদিন মোটা অঙ্কের লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
হঠাৎ শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগে ২০২১ সালে ২২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ২০২০ সালে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়ে ছিল।
অন্যদিকে, সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসের ব্যবসায় কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৩০ পয়সা মুনাফা করেছে। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ১ টাকা ৭০ পয়সা। অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের ব্যবসায় কোম্পানিটির মুনাফায় অবনতি হয়েছে।
৪৩ কোটি ১১ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৪ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার ১৪৪টি। এর মধ্যে ৪১ দশমিক ১১ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৩৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ শেয়ার আছে।
ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের পর গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় ছিল প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ১৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে এশিয়া প্যাসেফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজের ১৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্কের ১২ দশমিক ২৩ শতাংশ, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ১২ দশমিক ১৫ শতাংশ, ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ১১ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ১০ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম বেড়েছে।