বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তা পেলেই ফ্লোর প্রাইস বাতিল
বাধ্য হয়ে বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ফ্লোর প্রাইস দেয়া হয়েছিল জানিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, ‘বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়া হবে। আমরা যখন দেখব বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ রয়েছেন, তাদের পুঁজি নিরাপদে আছে তখনই ফ্লোর প্রাইস সরিয়ে দেব। আমরাও অধীর আগ্রহে আছি কখন এ ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে পারব।৷ আশা করছি শিগগিরই একটা শক্ত অবস্থানের দেখা পাব। আর ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দিতে পারব।’
রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাব্য সমাধান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গতকাল এসব কথা বলেন তিনি। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল ও অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডের (এএএমসিএমএফ) চেয়ারম্যান হাসান ইমাম। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির সদস্য মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হয়। এতে স্বল্প উন্নত দেশগুলোয় খাদ্য সংকট তৈরি হয়। এর প্রভাবে কয়েক মাসের মধ্যেই এলএনজির দরবৃদ্ধিসহ বিভিন্নভাবে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিল, যার কারণে পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানিতে বিশ্বব্যাপী দর বাড়ল। আমরা এর প্রভাবটা আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছিলাম। এ কারণে তখন বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তায় বাধ্য হয়েই ফ্লোর প্রাইস দিতে হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ইকুইটির পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। বাংলাদেশের বন্ড মার্কেটের প্রতি এখন বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও আগ্রহ দেখাচ্ছে। গত দেড়-দুই বছরে আমরা বন্ডের মাধ্যমে কোম্পানিগুলোকে অনুমানিক ৬০-৭০ হাজার কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ করে দিয়েছি, যেটা ইকুইটির মাধ্যমে দেয়া কখনো সম্ভব হতো না। এ ধরনের বড় অর্থ সংগ্রহের জন্য বন্ড মার্কেটকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সরকারি ট্রেজারি বন্ড পুঁজিবাজারে লেনদেনের ব্যবস্থা করেছি। এ মার্কেটের আকার প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা। এখানে বিনিয়োগ করা এফডিআরের থেকেও নিরাপদ। বন্ড মার্কেটকে আরো সিকিউরড করতে আমরা কাজ করছি।’