বিদেশী চিপ ব্যবহারে ৪০০ শতাংশ করারোপ করবে চীন

স্টাফ রিপোর্টার

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরির শঙ্কায় চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য বিরোধ শুরু। এর পরই অনেক প্রতিষ্ঠান চীনের কাছে চিপ উৎপাদন প্রযুক্তি থেকে শুরু করে সব ধরনের যন্ত্রাংশ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের বিপরীতে প্রযুক্তি বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে চীন সরকার। দেশটিতে থাকা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি বিদেশী চিপ ব্যবহার করতে চায় তাহলে ৪০০ শতাংশ কর দিতে হবে। খবর টেকটাইমস।

মিনজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাও হাইতাও এ সংকট সমাধানের উপায় জানিয়েছেন। চীনে যেসব প্রতিষ্ঠান স্মার্টফোন উৎপাদন করে তাদের ৩০ শতাংশ ডিভাইসে চাইনিজ চিপ ব্যবহার করতে হবে। গিজচায়না প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে অধিবাসীরা মিশ্র অভিমত দিয়েছে।

অনেকের মতে, এ উদ্যোগ কার্যকর হলে বিদেশী চাপ থেকে মুক্ত হয়ে চীন প্রযুক্তিবাজারে যে স্বায়ত্তশাসন তৈরি করতে চায় তা সহজ হবে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে মোবাইল বাজার পুরোপুরি চাইনিজ চিপনির্ভর হলে এগুলোর কার্যকারিতা অনেকটাই কমে যাবে।

চীনে তৈরি চিপের ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশটির সরকার প্রথমত স্মার্টফোন উৎপাদন প্রযুক্তি নিজেদের আয়ত্তে রাখতে পারবে এবং এ খাতের গবেষণা ও উন্নয়ন বাড়াতে উদ্যোগ নিতে পারবে। বিশ্বের চিপ উৎপাদন শিল্পে কোয়ালকম, মিডিয়াটেক থেকে শুরু করে অনেক প্রতিষ্ঠান চিপ তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। কাও হাইতাও যে সমাধান দিয়েছেন সেটি চীনের চিপ উৎপাদন শিল্প রক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ।

চীনের চিপ ব্যবহার নিশ্চিতের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো হলেও ইন্টারনেটে এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কেও সমালোচনা চলছে। নেট দুনিয়ার ব্যবহারকারীদের অভিমত, স্মার্টফোন তৈরিতে শুধু চাইনিজ চিপের ব্যবহার স্মার্টফোনের সক্ষমতা অনেকাংশে কমিয়ে দেবে। তাদের অভিমত, বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রযুক্তি আনতেই হবে। অন্যদিকে আয়ের হার নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কেননা তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির (টিএসএমসি) ৮০ শতাংশ আয় বিদেশ থেকেই হয়।

কাও হাইতাওর পরামর্শ সঠিক কিনা তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হলেও এটি অনস্বীকার্য যে প্রযুক্তি সংস্থাগুলো রক্ষার্থে চীন সরকারকে অবিলম্বে কাজ করতে হবে। বিতর্ক চলমান থাকলেও একটি বিষয় নিশ্চিত যে চীনের স্মার্টফোন শিল্পের ভবিষ্যৎ দেশটির সরকারের হাতেই। প্রফেসর কাও হাইতাওর পরামর্শের সম্ভাব্যতা নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে। তবে একটি টেকসই ও লাভজনক বাজার নিশ্চিত করার জন্য দেশীয় প্রযুক্তির বিকাশ ও বজায় রাখার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে।

চীন সরকার এ পরিকল্পনা গ্রহণ করবে কিনা তা অনুমান করা অসম্ভব। তবু চীনা বাজার ও ভোক্তা উভয়ের জন্য এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপের সম্ভাব্য পরিণতি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ বলেও জানান বিশ্লেষকরা। পরিপূর্ণ সিদ্ধান্তে না পৌঁছা পর্যন্ত সব বিষয়ের ভালো ও মন্দ দিক পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *